বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন সম্প্রতি এক সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্কের মান উন্নত করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। তিনি মন্তব্য করেছেন যে, দিল্লির সাথে ঢাকার গত সরকারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে ভারতের প্রতি মনোভাবের ক্ষেত্রে কিছু দূরত্ব রয়েছে। নতুন সরকারের পরিকল্পনা হলো এই দূরত্ব কাটিয়ে ভারতকে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা।
তৌহিদ হোসেন জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর বিষয়ে যদি আইন মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশ আসে, তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতকে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠাবে। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, শপথ গ্রহণের পর এটি ছিল তার প্রথম সাংবাদিক সম্মেলন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে, তৌহিদ হোসেন বলেন, ভারত ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে পূর্ববর্তী সম্পর্কের সোনালি অধ্যায়ের বিষয়ে তার কিছু সংশয় রয়েছে। তিনি চান যে, এই সম্পর্ক শুধু দুই সরকারের মধ্যে নয়, বরং দুই দেশের মানুষের মধ্যেও সুদৃঢ় এবং ঘনিষ্ঠ হওয়া উচিত।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার বৈশ্বিক সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, এই সরকার ভারত ও চীনের সঙ্গে পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গেও সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায়।
তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘ সহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিষয়গুলো সহজ এবং মসৃণভাবে এগিয়ে নিতে সরকার কাজ করছে।
তৌহিদ হোসেন সেন্ট মার্টিন ও বঙ্গোপসাগরের বিষয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য সম্পর্কেও মন্তব্য করেছেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, শেখ হাসিনার কোনও অঙ্গীকার করা হয়নি বলে তিনি মনে করেন।
সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রসঙ্গে, তৌহিদ হোসেন বলেন যে, কিছু সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে যা ধর্মীয় কারণে নয়, বরং রাজনৈতিক কারণেই। সরকারের অঙ্গীকার হচ্ছে যে, সমস্ত অন্যায়-অনাচারের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পরিস্থিতি দ্রুত স্থিতিশীল করার জন্য সরকার তৎপর রয়েছে, এবং আগামীদিনে এ বিষয়ে আরো পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান তৌহিদ হোসেন।