ঢাকা মডেল ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ফয়জুল ইসলাম রাজন (১৮) হত্যার অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। রাজনের ভাই রাজিব (৩২) বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আহম্মেদ হুমায়ুন কবিরের আদালতে এই মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে কাফরুল থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন: সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য মইনুল হোসেন খান নিখিল, ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এ মান্নান কচি, স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি গাজি মেজবাউল হক সাচ্ছু, সাবেক সংসদ সদস্য কামাল আহম্মেদ মজুমদার, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মানুন, অতিরিক্ত আইজিপি ও র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক হারুন অর রশিদ, ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিএমপি ডিবির সাবেক প্রধান হারুন আর রশিদ, সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, স্থানীয় আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন, উত্তর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর জামাল মোস্তফা, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ওয়ালী আসিফ ইনান, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগ নেতা সালামত উল্লাহ সাগর এবং সদস্য দীপংকর বাছার দিপ্ত। এছাড়াও, মামলায় আওয়ামী লীগের আরও ৫০০ থেকে ৬০০ নেতাকর্মীকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
বাদী অভিযোগ করেন, ফয়জুল ইসলাম রাজন রাজধানীর কাফরুল থানার ঢাকা মডেল ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণের জন্য রাজন এবং অন্যান্য ছাত্ররা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে যুক্ত হন। ১৪ জুলাই শেখ হাসিনা আন্দোলনকারী ছাত্রদের ‘রাজাকরের বাচ্চা’ বলে উল্লেখ করেন, যা দেশের গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হয়। এই উসকানিমূলক বক্তব্যের ফলে ছাত্ররা আরও উত্তেজিত হয়ে ওঠে এবং আন্দোলন জোরদার করে।
১৫ জুলাই, আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের ‘ছাত্রলীগই যথেষ্ট’ মন্তব্য করে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে হামলা চালানোর নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, হাসান মাহমুদ ও অন্যান্য নেতাদের পরিকল্পনায় নিরস্ত্র ছাত্রদের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
বাদী আরও উল্লেখ করেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ এবং অজ্ঞাতনামা ৫০০ থেকে ৬০০ নেতাকর্মী সমন্বয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি চালানো হয়। ১৯ জুলাই, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর গুলি চালালে রাজনসহ অনেক ছাত্র আহত এবং নিহত হন।
https://slotbet.online/