সম্প্রতি বাংলাদেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করা কোকা কোলা বয়কট আন্দোলনের প্রেক্ষিতে, জনপ্রিয় কন্টেন্ট ক্রিয়েটর সারাফ আহমেদ জিবনের ফেসবুক আইডিটি পুনরায় ডিসেবল করা হয়েছে। জিবনের ৩৩ হাজার ফলোয়ার থাকা ফেসবুক পেইজ থেকেও একটি ছবি কপিরাইট দাবি করে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এই আন্দোলনের সাথে জড়িতদের দাবি, দ্রুততম সময়ে তার পুরো পেইজটিও মুছে ফেলা হবে।
কোকা কোলা ইসরায়েলের একটি পণ্য হিসেবে পরিচিত। ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যকার চলমান সহিংসতার প্রেক্ষিতে, বাংলাদেশে কোকা কোলার পণ্য বয়কটের আহ্বান জানানো হয়। কোকা কোলার সম্প্রতি প্রচারিত 'এটা ঐ জায়গার না' শিরোনামের বিজ্ঞাপনটি কোক স্টুডিও ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশের পর, এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। ওই বিজ্ঞাপনে অংশগ্রহণ করেছিলেন সারাফ আহমেদ জিবন এবং সিমুল সর্মা।
বাংলাদেশের জনগণের একাংশ কোকা কোলার পাশাপাশি সারাফ আহমেদ জিবন ও সিমুল সর্মাকে তাদের ভূমিকার কারণে বয়কট করতে শুরু করে। তাদের ধারণা, এই বিজ্ঞাপনটি প্রচারিত হওয়া অর্থের দ্বারা ইসরায়েলের সহিংসতাকে পরোক্ষভাবে সমর্থন করা হচ্ছে।
প্রতিবাদীদের একটি দল, 'সাইবার ৭১ - উই হ্যাক টু প্রোটেক্ট বাংলাদেশ', জিবনের ফেসবুক আইডি ডিঅ্যাক্টিভেট করতে সফল হয়েছে। তাদের দাবি, তারা দেশের জাতীয় ও সামাজিক সুরক্ষার স্বার্থে এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে সাইবার ৭১-এর এক মুখপাত্র জানান, "আমরা সবসময় দেশ ও জনগণের স্বার্থে কাজ করে থাকি। যারা ইসরায়েলের সাথে যেকোনোভাবে সংযুক্ত বা তাদের পণ্যকে সমর্থন করে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের কঠোর পদক্ষেপ থাকবে।"
এই ঘটনা কেবলমাত্র সারাফ আহমেদ জিবনের জন্য একটি বড় আঘাত নয়, বরং দেশের ডিজিটাল সুরক্ষার জন্য একটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। যদিও সারাফ আহমেদ জিবনের ফেসবুক আইডি ডিঅ্যাক্টিভেট হওয়ার বিষয়ে তিনি নিজে কোনো মন্তব্য করেননি, তার অনুগামীরা তার আইডি ফিরে পাওয়ার আশায় আছেন।
বাংলাদেশে কোকা কোলা বয়কট আন্দোলন আরও তীব্র হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে বয়কটের ডাক অনেকটা প্রতীকী প্রতিবাদের মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। অনেকেই মনে করছেন, কোকা কোলা পণ্য ব্যবহার না করার মাধ্যমে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন প্রত্যাহার করা যাবে।
কোকা কোলার বিরুদ্ধে এই আন্দোলন প্রমাণ করে যে, সাধারণ জনগণ তাদের আদর্শের প্রতি কতটা অনুগত। তারা কেবলমাত্র পণ্য বয়কটের মাধ্যমেই নয়, বরং যারা এই পণ্যকে সমর্থন করে, তাদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।
এই প্রেক্ষাপটে, কোকা কোলা এবং অন্যান্য ইসরায়েলি পণ্যকে বয়কট করার মাধ্যমে বাংলাদেশে আরও অনেক সচেতনতার জন্ম হবে বলে আশা করা যায়।