ঢাকা, ২৮ জুন ২০২৪ – বাংলাদেশের ইতিহাসে “জল্লাদ” শাহজাহান একটি বিশেষ পরিচিত নাম। তিনি দেশের অন্যতম আলোচিত এবং বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব ছিলেন, যিনি দীর্ঘকাল ধরে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর জীবনের কাহিনী বিভিন্ন মাধ্যমে উঠে এসেছে, যার মধ্যে আত্মজীবনীমূলক বই “কেমন ছিল জল্লাদ জীবন” এবং উইকিপিডিয়া উল্লেখযোগ্য।
শাহজাহান, পুরো নাম মো. শাহজাহান, এক সাধারণ পরিবারের সন্তান ছিলেন। গ্রামীণ জীবনে বেড়ে ওঠা শাহজাহান, জীবিকার তাগিদে চাকরি খুঁজতে গিয়ে কারাগারের একজন কর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন।
তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় পরিবর্তন আসে যখন তাঁকে কারাগারে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দায়িত্ব দেওয়া হয়। “জল্লাদ” নামটি তখনই তাঁর সাথে যুক্ত হয়ে যায়। দীর্ঘ ২৫ বছরের কর্মজীবনে তিনি প্রায় ২৬ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছিলেন।
“কেমন ছিল জল্লাদ জীবন” বইটি শাহজাহানের কর্মজীবন এবং ব্যক্তিগত জীবনের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে রচিত। বইটিতে তিনি মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দিনগুলো, তাঁর মানসিক যন্ত্রণার কথা এবং তাঁর জীবনযাত্রার অন্যান্য দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
বইটির প্রেক্ষাপটে, শাহজাহান তুলে ধরেছেন কিভাবে এক এক জনের মৃত্যু তাঁর মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। একজন জল্লাদ হিসাবে তাঁর কাজ কখনোই সহজ ছিল না। প্রতিটি মৃত্যুদণ্ড ছিল তাঁর জন্য এক একটি মানসিক যুদ্ধ।
উইকিপিডিয়ায় শাহজাহানের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, তিনি কিভাবে একজন সাধারণ কর্মী থেকে দেশের অন্যতম প্রধান জল্লাদ হয়ে উঠলেন। শাহজাহানের বর্ণনা অনুযায়ী, তাঁর বাবা ছিলেন একজন কৃষক এবং তিনি নিজেও শৈশবে কৃষিকাজে সহায়তা করতেন।
শাহজাহানের কর্মজীবনে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা ছিল যুদ্ধাপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা। তিনি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের অপরাধীদের দণ্ড কার্যকর করার জন্য ব্যাপকভাবে পরিচিত হয়ে ওঠেন।
মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের কাজ ছেড়ে দেওয়ার পর শাহজাহান মানবিক কাজের দিকে মনোনিবেশ করেন। তিনি বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডে নিজেকে যুক্ত করেন এবং ধর্মীয় চর্চা শুরু করেন।
তাঁর জীবনের শেষ অধ্যায়টি ছিল শান্তি ও সামাজিক কল্যাণের দিকে যাত্রা। তিনি শিশুদের জন্য শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের উন্নয়নে কাজ শুরু করেন এবং সমাজের প্রতি তাঁর অবদান রাখার চেষ্টা করেন।
“জল্লাদ” শাহজাহানের জীবন আমাদের জন্য একটি শিক্ষণীয় দৃষ্টান্ত। তিনি তাঁর জীবনের সবচেয়ে অন্ধকার দিক থেকে উঠে এসে আলোর পথে চলার চেষ্টা করেছেন। শাহজাহানের কাহিনী আমাদের শেখায়, মানুষ কঠিন পরিস্থিতিতেও কিভাবে মানবিকতা বজায় রাখতে পারে এবং নিজেকে পরিবর্তনের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।
সূত্র:
https://slotbet.online/