ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে ১১ দফা দাবিতে আন্দোলনরত পুলিশ সদস্যদের সাথে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মতবিনিময় সভা হট্টগোলের কারণে মাঝপথেই বন্ধ হয়ে গেছে। শুক্রবার বিকেলে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়–বিষয়ক উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, তবে তিনি আসতে পারেননি।
সভার শুরুতে পুলিশের নতুন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম বক্তব্য শুরু করলে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা উত্তেজিত হয়ে হট্টগোল শুরু করেন। এ সময় উত্তেজিত সদস্যরা একজন অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত দেখে আইজিপিসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সভা শেষ না করেই চলে যান।
আইজিপি ময়নুল ইসলাম বলেন, আহত পুলিশ সদস্যদের আধুনিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে এবং প্রয়োজন হলে বিদেশি পরামর্শকও আনা হবে। নিহত সদস্যদের পরিবারের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বলেন, ১১ দফা দাবি নিয়ে রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পুলিশের প্রতিনিধিদল নিয়ে আলোচনা করা হবে এবং জুনিয়র সদস্যরা সিনিয়রদের হয়রানির শিকার হবেন না।
তবে, আন্দোলনরত সদস্যরা আইজিপির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। তাঁরা বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে রাজারবাগে আনার দাবিতে অনড় রয়েছেন এবং আলোচনা এখানেই হবে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন র্যাবের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান এবং ডিএমপি কমিশনার মাইনুল হাসান। পুলিশ সদস্যরা দাবি করেন, আইজিপি কর্তৃক গঠিত ৮ সদস্যের কমিটির পাশাপাশি কনস্টেবল থেকে এসআই পদমর্যাদার সদস্যদের জন্য একটি পৃথক কমিটি গঠন করা উচিত, যা তাঁদের সমস্যার সমাধানে কাজ করবে। এক কনস্টেবল বলেন, ৫ আগস্টের পর কনস্টেবল থেকে এসআই পদমর্যাদার যত সদস্য মারা গেছেন, গত ৫০ বছরে পুলিশের অফিসার পদমর্যাদার এত সদস্য মারা যাননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের কিছু সদস্য জানান, তাঁদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কাজে ফিরবেন না। তাঁরা দাবি করেন, পুলিশ বাহিনীর পুরো সংস্কার প্রয়োজন এবং অতীতের ভুলের জন্য আইজিপিকে জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। নতুন বাহিনী গঠনের প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে, যার ঘোষণা ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা করবেন।