বাংলাদেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তনের হাওয়া বইছে, যেখানে একের পর এক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদত্যাগ করছেন। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে, দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন, যা দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার ওপর গভীর প্রভাব ফেলছে।
গতকাল, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ তাঁর পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাঁর পক্ষে দায়িত্ব পালন সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং তাই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এর পাশাপাশি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সাদেকা হালিম, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মশিউর রহমান, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এমদাদুল হক চৌধুরী, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এফ এম আবদুল মঈন এবং জামালপুরের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. কামরুল আলম খানও পদত্যাগ করেছেন।
এছাড়া, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আবু তাহের তাঁর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছেন, যদিও এ বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হলের প্রাধ্যক্ষ ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরাও পদত্যাগ করেছেন, যা শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে করা হয়েছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজও তাঁর পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। একই দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন প্রাধ্যক্ষও পদত্যাগ করেছেন। তাঁদের পদত্যাগপত্রে ব্যক্তিগত কারণ উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে, বাংলাদেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপাচার্যদের পদত্যাগের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছেন এবং ছাত্রলীগ ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের হামলার অভিযোগের প্রেক্ষিতে শিক্ষকদের পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছেন। শনিবার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরাও পদত্যাগ করেছেন।
এই ঘটনায় দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় একটি বড় ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে এবং আগামী দিনগুলোতে এর প্রভাব কেমন হবে তা নিয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং সংশ্লিষ্ট সবাই উদ্বিগ্ন।