ঝালকাঠি সদর উপজেলার ঝালকাঠি সরকারি হরচন্দ্র বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের চতুর্থ তলার একটি শ্রেণিকক্ষ থেকে আফিয়া জাহান (১৪) নামের এক ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ সোমবার সকালে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটার পর বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেক শিক্ষার্থী সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলে বলে জানান সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা। আফিয়া ওই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির প্রভাতি শাখার ছাত্রী ছিলেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মহিতুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সকালে বিদ্যালয়ের বিরতির সময় গণেশ দাস ভবনের চতুর্থ তলার পূর্বদিকের একটি শ্রেণিকক্ষ থেকে আফিয়ার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। কক্ষটি তালাবদ্ধ না থাকায় আফিয়া সেখানে প্রবেশ করে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে নিজের ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। ঘটনাস্থলে শিক্ষার্থীদের চিৎকার ও আতঙ্কের কারণে দ্রুতই বিষয়টি শিক্ষকদের নজরে আসে।
আফিয়ার বাবা এইচ এম ওবায়দুল্লাহ আমির জানান, ‘প্রতিদিনের মতোই আফিয়া সকালের নাশতা খেয়ে বিদ্যালয় গিয়েছিল। বাসায় কারও সঙ্গে কোনো সমস্যা হয়নি। কী কারণে সে আত্মহত্যা করেছে, তা বুঝতে পারছি না।’ তিনি আরও জানান, সপ্তম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় আফিয়াকে এক ছেলের দ্বারা উত্ত্যক্ত করা হয়েছিল। তবে ওই ছেলের নাম বা পরিচয় তাঁর জানা নেই। তিনি ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
প্রভাতি শাখার জ্যেষ্ঠ শিক্ষক হুমায়ুন কবির হাওলাদার বলেন, ‘এ ঘটনাটি বিদ্যালয়ের বিরতির সময় ঘটেছে। ঘটনাস্থল হিসেবে ব্যবহৃত শ্রেণিকক্ষে আজ কোনো ক্লাস ছিল না। কী কারণে আফিয়া আত্মহত্যা করেছে, তা আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম ঘটনার পরপরই বরিশাল থেকে এসে দ্রুত ব্যবস্থা নেন। তিনি বলেন, ‘আমি জরুরি কিছু কেনাকাটা করার জন্য বরিশালে ছিলাম। আমি নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকি এবং শিক্ষার্থীদের দেখভাল করি।’
স্থানীয় বাসিন্দারা প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নুরুল ইসলামের অনুপস্থিতি নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন। তাদের মতে, তিনি বিদ্যালয়ে নিয়মিত উপস্থিত থাকেন না। এই ঘটনার পর বিদ্যালয়ের নিরাপত্তা এবং শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে।
এই মর্মান্তিক ঘটনা ঝালকাঠি সরকারি হরচন্দ্র বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মধ্যে প্রচণ্ড আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। নিরাপত্তা এবং মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
https://slotbet.online/