• বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ০৯:৩০ পূর্বাহ্ন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি ১৪৭ শিক্ষকের

চট্রগ্রাম প্রতিনিধি / ৪৩ Time View
Update : শনিবার, ১০ আগস্ট, ২০২৪

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪৭ জন শিক্ষক দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন। আজ শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তাঁরা এই দাবি জানান। শিক্ষকেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ (চাকসু) পুনরায় কার্যকর করা এবং কার্যকর সিনেট বাস্তবায়নের দাবি করেছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, গত দশকগুলোতে দলীয় ছাত্ররাজনীতি সহিংসতা, দখল, চাঁদাবাজি, নির্যাতন ও ভয়ের প্রতীক হয়ে উঠেছে। এই রাজনীতির ফলে শিক্ষার্থীরা মেধার ভিত্তিতে আবাসিক হলের আসন পাচ্ছেন না এবং একাডেমিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের নানা ধরনের নির্যাতন ও জিম্মিকরণের শিকার হতে হচ্ছে।

দলীয় রাজনীতির কারণে বিভিন্ন অপকর্মের কথা উল্লেখ করে শিক্ষকেরা জানান, ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনের সদস্যরা টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থী নিপীড়নের সঙ্গে জড়িত। বিগত দশকগুলোর চিত্র স্পষ্ট করেছে যে ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের প্রভাবে বিরোধী দলের ছাত্রসংগঠনগুলো ক্যাম্পাসে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেনি। রাজনৈতিক দলগুলো শিক্ষার্থীদের বারবার ব্যবহার করেছে ক্ষমতা দখলের জন্য, কিন্তু ক্ষমতা লাভের পর শিক্ষার্থীদের কল্যাণে মনোযোগী হয়নি।

শিক্ষকেরা মন্তব্য করেন, লেজুড়ভিত্তিক রাজনীতি সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। শিক্ষার্থীদের আবাসন ও খাবারের সমস্যা সত্ত্বেও দেশে ব্যয়বহুল উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলমান রয়েছে। শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ বাড়ছে এবং উচ্চশিক্ষায় ব্যক্তিগত ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে দলীয় লেজুড়ভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি শিক্ষার্থীদের কাছে আর গ্রহণযোগ্য নয়। তাই তাঁরা স্পষ্টভাবে দাবি করেছেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় লেজুড়বৃত্তি নিষিদ্ধ করা হোক।

চাকসু নির্বাচন দেওয়ার দাবিতে শিক্ষকেরা বলেন, ছাত্রদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য চাকসু প্রক্রিয়াকরণ ও কার্যকর সিনেট বাস্তবায়ন প্রয়োজন। চাকসু নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধির মাধ্যমে সিনেটে প্রতিনিধি পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ও কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের খাদিজা মিতু, আলাউদ্দিন, অদিতি মোশরেকা হক; সাংবাদিকতা বিভাগের আর রাজী ও সায়মা আলম; ভূগোল বিভাগের অলক পাল; প্রাণরসায়ন বিভাগের রেজওয়ানুল হক ও মোহাম্মদ মশাররফ হোসেন; জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের আদনান মান্নান, মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লুলু ওয়াল মারজান, এস এম রফিকুল ইসলাম ও মাহবুব হাসান; প্রাণীবিজ্ঞান বিভাগের মনজুরুল কিবরিয়া; কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের ইকবাল আহমেদ; অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের শারমিন সুলতানা, নুরুদ্দিন মাহমুদ; হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের আফতাব উদ্দিন; অ্যাকাউন্টিং বিভাগের সুমন ভট্টাচার্য, মৌরি দে; ফিন্যান্স বিভাগের অনুপম দাশ গুপ্ত; ফলিত রসায়ন বিভাগের দিদারুল আলম চৌধুরী, মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম; অর্থনীতি বিভাগের মোহাম্মদ তারেকুল হাসান চৌধুরী; ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মোহাম্মদ ফজলুল কাদের; আইন বিভাগের আসমা বিনতে শফিক; ব্যবস্থাপনা বিভাগের অনুপম কুমার দাশ; মার্কেটিং বিভাগের এইচ এম কামরুল হাসান; শিক্ষা গবেষণা ইনস্টিটিউটের তাসনিম মুশাররাত; মৃত্তিকাবিজ্ঞান বিভাগের মাজহারুল ইসলাম প্রমুখ।


More News Of This Category
https://slotbet.online/