বিরাট কোহলি, ক্রিকেটের আধুনিক যুগের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান, তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের পরিসমাপ্তি ঘোষণা করেছেন। ৩৫ বছর বয়সী এই ভারতীয় ব্যাটসম্যান অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয় নিশ্চিত করার পরই এ ঘোষণা দেন। ফাইনালে ৫৯ বলে ৭৬ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে ম্যাচসেরার পুরস্কার নিতে এসে এ ঘোষণা দেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক। এই জয়ের মাধ্যমে ভারত ১৭ বছর পর দ্বিতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শিরোপা জিতেছে।
ফাইল ছবি
ফাইনালে ভারতের ব্যাটিং ইনিংসে বিরাট কোহলি ছিলেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং অপরাজেয়। ৭৫ বলে ৭৫ রান করে চাপের মধ্যে থাকা কোহলি ফাইনালে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলতে থাকেন। তার ব্যাটিংয়ের সৌজন্যে ভারত দলকে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক স্কোর এনে দেয়। যদিও অন্যপ্রান্তে দ্রুত উইকেট পড়ে যায়, কোহলি সেই চাপ সামলাতে সক্ষম হন এবং তার অসাধারণ ইনিংসের কারণে ম্যাচসেরার পুরস্কার পান।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত সঞ্চালক হার্শা ভোগলে যখন কোহলির কাছ থেকে তার অনুভূতি জানতে চান, তখনই কোহলি তার অবসরের ঘোষণা করেন। কোহলি বলেন, ‘এটা আমার শেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং এটি আমরা অর্জন করতে চেয়েছি। একদিন আপনার মনে হবে রানই করতে পারছেন না, তারপরে কিছু ঘটবে। ঈশ্বর মহান। এবং যে দিন গুরুত্বপূর্ণ, আমি দলের কাজটি করেছি। এখন অথবা কখনোই নয়-ভারতের হয়ে আমার শেষ টি-টোয়েন্টি—সবটুকু কাজে লাগাতে চেয়েছি।’
ভোগলে কোহলির কথা শুনে অবাক হন এবং সেটি নিশ্চিত হতে চান। কোহলি দৃঢ়তার সাথে নিশ্চিত করে বলেন যে এখন সময় হয়েছে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য দায়িত্ব নেওয়ার। তিনি বলেন, ‘ট্রফিটা উঁচিয়ে ধরতে চেয়েছি। পরিস্থিতিকে সম্মান জানাতে চেয়েছি জোর করার চেয়ে। এটা (অবসর) “ওপেন সিক্রেট” ছিল, এখন পরবর্তী প্রজন্মের দায়িত্ব নেওয়ার পালা। দুর্দান্ত কিছু খেলোয়াড় দলকে এগিয়ে নেবে এবং পতাকা উঁচু করে ধরবে।’
ফাইল ছবি
২০১০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার শুরু করেন কোহলি। তার দীর্ঘ ১৪ বছরের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে তিনি খেলেছেন ১২৫টি ম্যাচ, যেখানে তিনি সংগ্রহ করেছেন ৪১৮৮ রান। রোহিত শর্মার পর তিনি টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ভারতের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। তার ব্যাটিং গড় ছিল ৪৮.৬৯ এবং স্ট্রাইক রেট ছিল ১৩৭.০৪। এছাড়া ভারতকে ৫০টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি।
বিরাট কোহলির অবসর শুধু ভারতীয় ক্রিকেট দলের জন্যই নয়, বিশ্ব ক্রিকেটের জন্যও একটি যুগের সমাপ্তি। তিনি ছিলেন আধুনিক ক্রিকেটের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব এবং তার অবদান সবসময় স্মরণীয় থাকবে। তার অভিজ্ঞতা, নেতৃত্ব এবং ব্যাটিং দক্ষতা নতুন প্রজন্মের ক্রিকেটারদের জন্য প্রেরণার উৎস হিসেবে থাকবে। কোহলির বিদায় আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে একটি যুগের অবসান ঘটালেও, তার উত্তরাধিকার প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে থাকবে।
বিরাট কোহলি
**সংক্ষিপ্ত স্কোর:**
– ভারত: ২০ ওভারে ১৭৬/৭ (কোহলি ৭৬, অক্ষর ৪৭, দুবে ২৭; মহারাজ ২/২৩, নর্কিয়া ২/২৬, রাবাদা ১/৩৬)
– দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ১৬৯/৮ (ক্লাসেন ৫২, ডি কক ৩৯, স্টাবস ৩১; পান্ডিয়া ৩/২০, বুমরা ২/১৮, অর্শদীপ ২/২০)
– ফল: ভারত ৭ রানে জয়ী।
**পরিসংখ্যান:**
– টি-টোয়েন্টি ম্যাচ: ১২৫
– রান: ৪১৮৮
– গড়: ৪৮.৬৯
– স্ট্রাইক রেট: ১৩৭.০৪
– নেতৃত্ব: ৫০টি ম্যাচ
https://slotbet.online/