রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার অভিযোগে এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কিশোরের জন্মসনদ অনুযায়ী বয়স ১৬ বছর ১০ মাস হলেও পুলিশ তাকে ১৯ বছর বয়সী হিসেবে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে। গ্রেপ্তারের পর থেকে সে ১২ দিন ধরে রংপুর কারাগারে আটক রয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত কিশোর রংপুর পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। প্রতিষ্ঠানের উপাধ্যক্ষ (প্রশাসন) সেলিম আহমেদ জানিয়েছেন, ছাত্রটি তাঁদের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এবং তাকে রংপুর কারাগারে বন্দী রাখা হয়েছে।
ছাত্রটির বাবা, যিনি রংপুরের পার্কের মোড়ে স্টুডিও ব্যবসা করেন, জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে ১৮ জুলাই বাড়ি থেকে বেরিয়ে মডার্ন মোড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সেখানেই তার পায়ে গুলি লাগে এবং পুলিশ তাকে আটক করে। পরদিন ছাড়া দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তাকে জেলে পাঠানো হয়।
রংপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক রাজিবুল ইসলাম বলেন, আবু সাঈদের বুক ও পেট ছররা গুলিতে ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায়। হত্যাকাণ্ডের ঘটনার ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ নিহত হন। তবুও কিশোরটি হত্যার আসামি করা হয়েছে এবং তার বয়স ১৯ বছর দেখানো হয়েছে।
রংপুর মেট্রোপলিটনের তাজহাট আমলি আদালতে ১৯ জুলাই কিশোরটিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে হাজির করা হয় এবং আদালত তাকে কারাগারে পাঠান। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক জিল্লুর রহমান বলেন, গ্রেপ্তারের সময় বয়স যাচাই করা হয়নি, তবে পরে জানা যায় তার বয়স ১৭ বছরের মতো।
ছাত্রটির বাবা দাবি করেন, তাঁর ছেলে কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত নয় এবং পুলিশ তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে। কারাগারে অসুস্থ থাকার পরও তাকে দেখতে দেওয়া হয়নি।
রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন, তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেছেন এবং আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধানের চেষ্টা করছেন। কিশোরের আইনজীবী আবদুল মোকছেদ বাহালুল জানিয়েছেন, জন্মসনদসহ প্রমাণপত্র দিয়ে রংপুর শিশু আদালতে জামিনের আবেদন করা হয়েছে, যা ৪ আগস্ট শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
https://slotbet.online/