চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার সামনে ঘটে যাওয়া এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সাঁজোয়া যানগুলির পাশের চারটি পিকআপ সম্পূর্ণভাবে পুড়ে গেছে। এছাড়া, কয়েকটি কার, মাইক্রোবাস এবং মোটরসাইকেলও একইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। থানা ভবনের অভ্যন্তরে অবকাঠামোগত ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে; ডিউটি অফিসারের কক্ষ ও ওসির কক্ষ সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে এবং দ্বিতীয় তলায় এসআই ও এএসআইদের বসার কক্ষও ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। তৃতীয় তলায় থাকা পুলিশ সদস্যদের জিনিসপত্র এবং খাটও ভেঙে ফেলা হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে কোতোয়ালি থানার অবকাঠামোগত ক্ষতির পরিমাণ ১.৫ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, তবে আসবাবপত্র এবং অন্যান্য মালপত্রের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব এখনো করা হয়নি। কোতোয়ালি থানার পাশাপাশি নগরের আটটি থানার ও আটটি পুলিশ ফাঁড়ির ক্ষতির পরিমাণ মোট ২১ কোটি টাকা।
এ ঘটনায় প্রায় ৫০০ অস্ত্র এবং ১২ হাজারের বেশি গুলি লুট হওয়ার প্রাথমিক ধারণা দিয়েছে পুলিশ। লুট হওয়া অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে শটগান, পিস্তল এবং রাইফেল। আগুনে থানায় থাকা গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রও পুড়ে গেছে, ফলে সঠিক পরিসংখ্যান জানা সম্ভব হয়নি। র্যাব ৩৫টি অস্ত্র ও ২৭৫টি গুলি উদ্ধার করেছে, তবে বাকি অস্ত্রগুলো এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এসব অস্ত্র অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে চট্টগ্রাম নগরে বিভিন্ন এলাকায় বিশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত দুষ্কৃতকারীরা অগ্নিসংযোগ, হামলা, ভাঙচুর এবং লুটপাট চালায়, যার ফলে আটটি থানা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। পতেঙ্গা ও ইপিজেড থানাগুলি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমানে পার্শ্ববর্তী ফাঁড়িতে এসব থানার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
নগর পুলিশের উপকমিশনার (সদর) এস এম মোস্তাইন হোসেন জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে থানা ও পুলিশ ফাঁড়ির অবকাঠামোগত ক্ষতির পরিমাণ ২১ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আসবাবপত্রসহ অন্যান্য জিনিসের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব এখনো করা হচ্ছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত থানাগুলোর মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিকল্প ব্যবস্থায় সব থানার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
পুলিশের সূত্রে জানা যায়, পাহাড়তলী থানার অবকাঠামোগত ক্ষতির পরিমাণ ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা, ইপিজেড থানায় ৭০ লাখ, পতেঙ্গায় ৮০ লাখ, হালিশহরে ১.৫ কোটি, ডবলমুরিংয়ে ১ কোটি ২০ লাখ, চান্দগাঁও ১ কোটি ২০ লাখ, বন্দর থানায় ১.৫ কোটি, সদরঘাট ৮০ লাখ এবং আকবর শাহ থানায় ৭০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। পুলিশ ফাঁড়িগুলোর মধ্যে পাথরঘাটায় ৮০ লাখ, সদরঘাটে ১ কোটি, ইপিজেডে ৭০ লাখ, উত্তর হালিশহরে ৬০ লাখ, মোহরায় ৬০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। দামপাড়া পুলিশ লাইনসে ৬০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা দাবি করেছেন, স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনের মাধ্যমে তাদের ১১ দফা দাবি বাস্তবায়িত হোক এবং পুলিশকে আর কোনো রাজনৈতিক দলের স্বার্থে ব্যবহার করা না হয়।
https://slotbet.online/