• বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ০৯:০০ অপরাহ্ন

ময়নাতদন্ত ছাড়াই অনেকের দাফন: বিচার নিয়ে উদ্বেগ

Reporter Name / ৪৫ Time View
Update : মঙ্গলবার, ১৩ আগস্ট, ২০২৪

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্ত ছাড়াই ৬০টি লাশ নিয়ে যান স্বজনেরা, আর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে নেওয়া হয় ৪১টি লাশ। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের মধ্যে ৫৮০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, এর মধ্যে ২০৮ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাদের অনেককে মৃত অবস্থায় এবং কিছুজনকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল।

এক অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০৭ জনের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে, তবে ৬০টি লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফনের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। একইভাবে, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪১ জনের লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়নি। এ ছাড়াও, গুলিবিদ্ধ আরও অনেক লাশ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে নিয়ে দাফন করা হয়।

ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া এসব হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের বিচার করা কঠিন হবে। ফৌজদারি কার্যবিধি ও পুলিশ প্রবিধান অনুযায়ী, অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে লাশের সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত করা অপরিহার্য। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হলো ফৌজদারি মামলার তদন্ত ও বিচারের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, সংঘর্ষে নিহতদের মধ্যে কিছু স্বজন ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়াই লাশ নিয়ে গেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এসব মৃত্যু সম্পর্কে পুলিশকে জানানো হয়েছিল, কিন্তু পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, ময়নাতদন্ত ছাড়া মরদেহ নিয়ে যাওয়ার কোনো তথ্য তার কাছে নেই।

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক শফিউর রহমান জানান, তাদের হাসপাতালে জুলাই ও আগস্টে নিহত ৪১ জনের সুরতহাল ও ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশকে জানানো হলেও তারা আসেনি, ফলে লাশগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করতে হয়েছে।

আইনজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন, অস্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে পুলিশ সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করবে এবং ময়নাতদন্তের জন্য ফরেনসিক চিকিৎসকের কাছে পাঠাবে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন অপরাধ মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য হিসেবে বিবেচিত।

আইজিপি (অব.) নূর মোহাম্মদ বলেন, আইন অনুযায়ী, সংঘর্ষে নিহতদের সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত করা উচিত ছিল। ময়নাতদন্ত ছাড়া মৃত্যুর কারণ জানা যাবে না।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিকের মতে, ফৌজদারি কার্যবিধির লঙ্ঘনের দায়ে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। ন্যায়ের জন্য প্রতিটি মরদেহের ময়নাতদন্ত নিশ্চিত করা জরুরি।


More News Of This Category
https://slotbet.online/