• বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ০৩:৪৮ অপরাহ্ন

ডলারের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত আমদানিকারকেরা ঋণ পরিশোধে ৮ বছর সময় পাবেন

Reporter Name / ৪৫ Time View
Update : বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪

বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অস্থিরতা এবং ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে যেসব আমদানিনির্ভর শিল্প খাত ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে, তাদের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন নির্দেশনা প্রদান করেছে। এসব শিল্প খাতের ব্যবসায়ীরা এখন থেকে ঋণ পরিশোধে ৮ বছর পর্যন্ত সময় পাবে। ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বাড়ানোর পাশাপাশি, ঋণ পরিশোধের শর্তও সহজ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণ আলাদাভাবে হিসাব করে এক বছরের বিরতি দিয়ে প্রতি মাসে বা ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে পরিশোধ করা যাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক আজ এক প্রজ্ঞাপনে জানিয়েছে যে, যেসব ব্যবসায়ী ডলারের বিনিময় হার বৃদ্ধির কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন, শুধু তারা এই সুযোগ পাবেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্পষ্টভাবে বলেছে যে, কোভিড-১৯ মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাবের কারণে টাকার মান অনেক কমে গেছে, যার ফলস্বরূপ আমদানিনির্ভর শিল্পগুলো তাদের কাঁচামাল আমদানিতে দুর্বল বিনিময় হারের কারণে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এই পরিস্থিতি তাদের উৎপাদন ক্ষমতা কমিয়ে দিয়েছে এবং তাদের চলতি মূলধনে ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছে।

বিশেষত, ইস্পাত, সিমেন্ট, স্টিল ও খাদ্যপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো, যাদের পণ্যের দাম সরকার নির্ধারণ করে, এই সুবিধার আওতায় পড়বে। এসব শিল্পের উৎপাদন ব্যবস্থায় সমস্যা সৃষ্টি হলে দেশের আর্থিক প্রবৃদ্ধি এবং রপ্তানির গতিশীলতা ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। এজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই ব্যবস্থা নিয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত খোলা ঋণপত্রের ক্ষেত্রে ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক। এরপর, এই ক্ষতির পরিমাণ সমন্বয় করে একটি পৃথক মেয়াদি ঋণ হিসেবে গ্রাহকের ঋণ পরিশোধের জন্য নির্ধারণ করা হবে, যা ৮ বছর পর্যন্ত মেয়াদী হতে পারে। ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে, একক গ্রাহকের ঋণসীমা কোনোভাবেই অতিক্রম করা যাবে না এবং খেলাপি গ্রাহকরা এই সুবিধা পাবেন না।

এই সুবিধা গ্রহণের জন্য গ্রাহকদের আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে ব্যাংকের কাছে আবেদন করতে হবে। ব্যাংকগুলোকেও এই আবেদন প্রক্রিয়া যাচাই করার জন্য উপযুক্ত নথি সংরক্ষণ করতে হবে, যাতে তারা নিশ্চিত হতে পারে যে, গ্রাহক প্রকৃতপক্ষে বিনিময় হারজনিত ক্ষতির শিকার হয়েছেন।

এদিকে, ইস্পাত শিল্পের বিভিন্ন সংগঠন, যেমন বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএসএমএ) ও বাংলাদেশ রি-রোলিং মিলস অ্যাসোসিয়েশন, একযোগভাবে দাবি জানিয়েছে যে, ডলারের বিনিময় হার বৃদ্ধির ফলে তাদের চলতি মূলধন ৪০ শতাংশ কমে গেছে এবং অনেক প্রতিষ্ঠান ঋণ পরিশোধে অক্ষম হয়ে পড়েছে। তাদের মতে, সরকারের নতুন নিয়ম অনুযায়ী ইস্পাত খাতের ব্যবসায়ীদের জন্য ঋণ পরিশোধের সময়সীমা আরও বাড়ানো উচিত, যাতে তারা সহজভাবে ঋণ পরিশোধ করতে পারে এবং খাতের সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়।

তবে, ব্যাংকগুলো এই প্রক্রিয়ায় নিশ্চিত করবে যে, ঋণ পরিশোধের জন্য নির্ধারিত সুবিধা বাস্তবসম্মত এবং নিয়ম অনুযায়ী হচ্ছে, যাতে কোনো ধরনের অব্যবস্থাপনা বা দুর্নীতি যাতে না ঘটে।


More News Of This Category
https://slotbet.online/