• বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ০৩:১৬ অপরাহ্ন

পরিবেশের ক্ষতি করে, এমন কোনো প্রকল্প হাওরে হবে না: রিজওয়ানা হাসান

Reporter Name / ৩৯ Time View
Update : বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানিয়েছেন, হাওর এলাকায় পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে না। তিনি বলেছেন, হাওরের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করতে একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে, যাতে সেখানে পরিবেশের কোনো ধরনের ক্ষতি না হয়।

গত মঙ্গলবার সুনামগঞ্জের হাওর অঞ্চলে বোরো ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প (কাবিটা) বাস্তবায়ন নিয়ে একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘‘হাওরের পরিবেশের কথা মাথায় রেখে কোনো ধরনের পরিবেশগত ক্ষতি সাধনকারী প্রকল্প এখানে বাস্তবায়ন করা যাবে না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হওয়ার আগে কৃষকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য পিআইসি (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) গঠন এবং এলাকার জনগণের মতামত নেয়া জরুরি।’’

সভায় তিনি আরও বলেন, ‘‘এখন বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করতে হবে, আর এজন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে হবে। আমাদের মূল লক্ষ্য কৃষকদের ফসল রক্ষা করা। ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শুরু হতে হবে, যাতে সময়মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।’’

তিনি আরও জানান, কাজের অগ্রগতি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হবে, এবং সময়-সময় ‘জুম মিটিং’য়ের মাধ্যমে প্রকল্পের বাস্তবায়ন পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করা হবে। এই মিটিংয়ে কৃষক প্রতিনিধি, পিআইসি এবং মনিটরিং কমিটির সদস্যদের উপস্থিত থাকতে হবে।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘‘হাওরে বাঁধ নির্মাণের কাজ অন্তর্ভুক্তিমূলকভাবে করতে হবে। আমরা কৃষকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে চাই, কিন্তু এতে যারা কৃষিকাজে যুক্ত, তাদের মতামত এবং অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’’ তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘‘যারা জমির মালিক নন, অথচ কৃষিকাজে যুক্ত, তাদের কেন কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না?’’

তিনি একাধিকবার উল্লেখ করেন যে, হাওরে স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণ না করার জন্য, বিশেষ করে রাস্তা নির্মাণের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। নেত্রকোনায় একটি হাওর ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে রাস্তা নির্মাণের কারণে, এবং তেমন পরিস্থিতি হাওর এলাকায় যাতে না ঘটে, সে বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। তিনি বলেন, ‘‘হাওরে পারমানেন্ট স্ট্রাকচার তৈরি করলে পরিবেশগত ক্ষতি হতে পারে, যেমন চলনবিল ও মিঠামইনে হয়েছে, যেখানে সংশোধন করার কোনো সুযোগ থাকে না।’’

রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘‘টাঙ্গুয়ার হাওর রামসার সাইট হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। তাই এখানে কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হলে, তার প্রভাব সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করে পরিবেশগত সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।’’

সভায় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান, সুনামগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সমর কুমার পাল, স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠন ও প্রশাসনের প্রতিনিধি ছাড়াও কৃষকরা উপস্থিত ছিলেন। তারা সভায় তাদের মতামত ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং প্রকল্পটির যথাযথ বাস্তবায়নের জন্য সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

এছাড়া, সভায় অংশগ্রহণকারীরা পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে একত্রিত হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান এবং হাওরের প্রতিবেশি এলাকায় সমন্বিত উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন।

সর্বোপরি, হাওর অঞ্চলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করে উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনার উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়, যাতে পরিবেশের ক্ষতি না হয় এবং কৃষকদের সুবিধা নিশ্চিত করা যায়।


More News Of This Category
https://slotbet.online/