রাজশাহী শহরের গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষক দলের নেতা নজরুল ইসলাম হত্যার ছয় বছর পর তার পরিবার মামলা দায়ের করেছে। ঘটনার সময়, হামলাকারীরা ময়নাতদন্ত ছাড়াই নজরুল ইসলামের মরদেহ দাফন করতে বাধ্য করেছিল। মামলায় পুলিশ স্থানীয় এক মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে। রবিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গোদাগাড়ী থানার তদন্ত কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, শনিবার রাতে মামলাটি থানায় রেকর্ড করা হয় এবং প্রধান আসামি গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি আরো জানান, অন্যান্য আসামিদের ধরতে অভিযান চলমান রয়েছে।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির নাম সেতাবুর রহমান (৩৬)। তার বাড়ি মাটিকাটা গ্রামে, এবং তিনি মাটিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য ছিলেন। সেতাবুর রহমান একাধিক মাদক মামলার আসামি এবং তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত মাদক কারবারি। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা চালাচ্ছিলেন। সেতাবুরের চাচা, নাসির উদ্দিন (৫২), যিনি একজন মাদক ব্যবসায়ীও, এই মামলায় আসামি হয়েছেন। অপর আসামির মধ্যে সেতাবুরের বাবা আতাউর রহমান (৬০), মো. ডালিম (৩৬), মো. আলমগীর (৪৫), তরিকুল ইসলাম (৪৫), সোহেল রানা (৩০), তরিকুল ইসলাম (৩২), মো. সাদ্দাম (৩৪), এবং দুরুল মুন্সি (৫২) অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।
নিহত নজরুল ইসলামের ছেলে রবিউল ইসলাম উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক। আরেক ছেলে আসাদুজ্জামান সরকার বাদী হয়ে আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। পুলিশ জানায়, আসাদুজ্জামান সম্প্রতি আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে আদালত গোদাগাড়ী থানাকে প্রাথমিক তদন্ত করতে নির্দেশ দেন। তদন্তে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সঠিক প্রমাণিত হলে আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করতে পুলিশকে নির্দেশ দেয়। পরবর্তীতে পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে সেতাবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন নজরুল ইসলাম এবং তার ছেলে রবিউল সরকার মাটিকাটা ভোটকেন্দ্রে যান। সেখানে আওয়ামী লীগের কর্মীরা তাদের পিটিয়ে আহত করে এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়। পরে তারা সেখান থেকে পালিয়ে প্রাণে বাঁচে। পরবর্তীতে ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি সন্ধ্যায় আসামিরা নজরুল ইসলামের বাড়িতে হামলা চালায়। বাড়ির ব্যাপক ভাঙচুর ও প্রায় দুই লাখ টাকার মালামাল লুট করা হয়। বাধা দিলে, আসামিরা নজরুল ইসলামকে রড ও হকস্টিক দিয়ে পিটিয়ে হত্যা নিশ্চিত করে চলে যায়। হত্যার পর, আসামিরা মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফনে বাধ্য করেন। তখন পরিবারের সদস্যরা আসামিদের ভয়ে মামলা করতে পারেননি।
এই হত্যাকাণ্ডের পর দীর্ঘ ছয় বছর কোনো মামলা হয়নি, তবে সম্প্রতি আসাদুজ্জামান সরকারের উদ্যোগে মামলাটি পুনরায় উত্থাপন হয় এবং আসামিদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া শুরু হয়।
https://slotbet.online/