গাজীপুরের টিএনজেড অ্যাপারেলস কারখানার শ্রমিকেরা বকেয়া বেতনের দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের মতো ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন। ৪৮ ঘণ্টা ধরে চলা এই অবরোধে মহাসড়কটি পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে, ফলে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আজ সোমবার সকাল আটটার দিকে গাজীপুর নগরের মালেকের বাড়ি এলাকায় শ্রমিকদের এ কর্মসূচি অব্যাহত দেখা গেছে। শ্রমিকদের আন্দোলন ও রাস্তায় বসে বিক্ষোভের কারণে আশপাশের ১২টি কারখানায় সাময়িক ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
টিএনজেড অ্যাপারেলসের শ্রমিকদের অভিযোগ, গত তিন মাস ধরে তাদের বেতন দেওয়া হচ্ছে না। বিভিন্ন সময়ে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিলেও কারখানা কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এর আগে বারবার আশ্বাস দেওয়ার পরও বেতন না পাওয়ায় শ্রমিকদের ক্ষোভ চরমে পৌঁছে। গত শনিবার থেকে তারা মহাসড়কে অবস্থান নেন এবং যান চলাচল বন্ধ করে দেন।
শ্রমিক হাবিবুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “দুই মাস ধরে ঘরভাড়া দিতে পারছি না, দোকানে বাকি কিনতে হয়েছে, তারও টাকা দিতে পারছি না। এভাবে আর কত? বাধ্য হয়েই রাস্তায় নামতে হয়েছে।” শহিদুল ইসলাম নামে আরেক শ্রমিক বলেন, “আমাদের বেতন না দেওয়া পর্যন্ত রাস্তা ছাড়বো না। বেতন পেয়ে তবেই ঘরে ফিরবো।”
গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম জানান, “মালিকপক্ষকে অনেকবার সময় দেওয়া হলেও তারা বারবার ব্যর্থ হয়েছেন। শ্রমিকরা এখন আমাদের কথাও বিশ্বাস করছে না। আমরা তাদের বারবার বুঝিয়েছি, কিন্তু তারা অনড়, মহাসড়ক ছাড়তে রাজি নয়। শ্রমিকদের ধারণা, রাস্তায় অবরোধ করলে মালিকপক্ষের ওপর চাপ তৈরি হয়, আর এর ফলে তারা অর্থের ব্যবস্থা করে।”
শ্রমিকদের বিক্ষোভের কারণে মহাসড়কের দুই পাশে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। অনেক যাত্রী হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন, কেউ কেউ বিকল্প আঞ্চলিক সড়ক বা ট্রেনে যাত্রা করছেন। শ্রমিকেরা লাঠিসোঁটা হাতে মহাসড়কে স্লোগান দিচ্ছেন এবং কোনো যানবাহন যেতে চাইলে বাধা দিচ্ছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিল্প পুলিশ ও স্থানীয় থানা পুলিশ মহাসড়কে অবস্থান করছে।
এদিকে, শ্রমিকদের এই লাগাতার আন্দোলন এবং মহাসড়ক অবরোধে সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তির মধ্যে রয়েছেন।
https://slotbet.online/