• শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ০৭:২৮ অপরাহ্ন

ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত ধোবাউড়া: মানুষের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত

Reporter Name / ৩৪ Time View
Update : রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৪

বাংলাদেশের ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বন্যা পরিস্থিতি চরম বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। পাহাড়ি অঞ্চলের প্রবাহিত জলধারার কারণে এলাকায় ভয়াবহ inundation দেখা দিয়েছে। মেঘালয়ের শিববাড়ীর নিকটবর্তী ইউনিয়নগুলোতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। নেতাই নদীর বাঁধ ভেঙে ৭টি ইউনিয়নের প্রায় ১২৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া টানা বর্ষণে পরিস্থিতি অবনতির দিকে যায়। শুক্রবার ভোর থেকে পরিস্থিতি আরও গুরুতর হয়ে ওঠে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাতভর তারা ভয়াবহ বন্যার শিকার হয়েছেন। পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় রান্নাবান্নার পরিস্থিতি নেই, ফলে মানুষ শুকনা খাবার নিয়েই দিন কাটাচ্ছে। এমনকি, ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়ে অনেকেই রাস্তায় রাত কাটাচ্ছে।

দক্ষিণ মাইজপাড়া ও ঘোষগাঁও ইউনিয়নে সর্বাধিক ক্ষতি হয়েছে। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, ফলে উদ্ধারকর্মীরা যথাসময়ে পৌঁছাতে পারছেন না। স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উপজেলায় প্রায় ৩০ শতাংশ ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে, যা কৃষকদের জন্য বড় সংকট।

প্রবীণ বাসিন্দা মাইন উদ্দিন জানান, তিনি জীবনে কখনো এমন ভয়াবহ বন্যা দেখেননি। তিনি বলছেন, “এবারের বন্যা স্বাধীনতার পর হওয়া সব থেকে ভয়াবহ। মানুষ আতঙ্কিত, ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে এবং খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে।”

জলবায়ু পরিবর্তন ও নদীর পাড় ভাঙনের কারণে স্থানীয়রা এই বিপর্যয়ের জন্য দায়ী করছেন। তাঁরা দাবি করছেন, নদীর নিকটবর্তী এলাকায় অবৈধভাবে বালু তোলার ফলে নদীর ধার ভেঙে যায়।

উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, বন্যা পরিস্থিতি খুবই গুরুতর। সেখানকার সব প্রাথমিক বিদ্যালয়কে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত করা হয়েছে, তবে অধিকাংশ মানুষ আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিতে পছন্দ করছেন।

শনিবার দুপুরে স্থানীয়রা পানি, শুকনা খাবার ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। কিছু ব্যক্তি স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করেছেন, কিন্তু তা যথেষ্ট নয়।

সরকারিভাবে ত্রাণ কার্যক্রম এখনও শুরু হয়নি, তবে স্থানীয় পর্যায়ে কিছু শুকনা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, অনেকের খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে এবং তারা দ্রুত ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করার জন্য অনুরোধ করছেন।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ধোবাউড়া উপজেলার ১৬৪টি গ্রামের সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্থানীয় প্রশাসন তৎপর রয়েছে, কিন্তু বন্যা পরিস্থিতির স্থায়িত্ব উদ্বেগজনক। আশঙ্কা করা হচ্ছে, যদি দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া না হয়, তবে এ পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যাবে।


More News Of This Category
https://slotbet.online/