চট্টগ্রামের রাউজানে একটি ট্রাকের ধাক্কায় আহত দুই বন্ধুর মধ্যে একজন শহীদুল ইসলাম (২৩) মৃত্যুর কাছে পরাজিত হলেন। শুক্রবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু ঘটে। এর আগে, শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কের গহিরা এলাকায় শহীদুল ও তাঁর বন্ধু মিনহাজুর রহমান চৌধুরী (২৩) মোটরসাইকেল চালানোর সময় একটি ট্রাক তাঁদের ধাক্কা দেয়। এই মর্মান্তিক ঘটনায় মিনহাজুর ঘটনাস্থলে মারা যান।
শহীদুল ও মিনহাজুর রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সাতঘড়িয়া পাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তাঁদের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে, গ্রামের লোকজন এখনো তাঁদের স্মরণ করছে। ছোটবেলা থেকে এই দুই বন্ধু একসঙ্গে বেড়ে ওঠা, তাদের মধ্যে ছিল অটুট সম্পর্ক। এমনকি, মৃত্যুও তাঁদের বিচ্ছিন্ন করতে পারেনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে মিনহাজুর ও শহীদুল মোটরসাইকেলে করে ফটিকছড়ি উপজেলার মাইজভান্ডার দরবারে গিয়েছিলেন। পরদিন ভোরে ফেরার পথে গহিরা এলাকায় উল্টো দিক থেকে আসা একটি ট্রাক তাঁদের মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। দুর্ঘটনার পর দুজনই গুরুতর আহত হন এবং তাঁদের রাউজান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে মিনহাজুরকে মৃত ঘোষণা করা হয়। রাত ১১টার দিকে শহীদুলও চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
মিনহাজুরের বাবা মফিজুর রহমান চৌধুরী বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে কর্মরত। তিনি কিছু মাস আগে ছুটিতে দেশে এসেছিলেন এবং আগামী ৬ অক্টোবর ফেরার পরিকল্পনা ছিল। এই অপ্রত্যাশিত ঘটনায় তাঁর জীবন এলোমেলো হয়ে গেছে। মফিজুর বলেন, “মিনহাজুরের দেড় বছরের একটি কন্যা রয়েছে। বাবার পরিচয় দেওয়ার আগেই সে এতিম হয়ে গেল।” গতকাল দুপুর ৩টায় মিনহাজুরের জানাজার পর তাঁকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
অন্যদিকে, শহীদুল একটি খাদ্য পরিবেশক প্রতিষ্ঠানে বিক্রয় কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। তাঁর বাবা খোরশেদ আলম জানান, শনিবার বেলা ১১টায় শহীদুলের জানাজা সম্পন্ন হয়েছে এবং তাঁকেও দাফন করা হয়েছে।
রাউজান হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুল হক বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দুজনের লাশ আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।