নিপীড়নমূলক রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হল সম্মতি উৎপাদন, যা তৈরি করতে হয় ভয়ের সংস্কৃতি জারি রেখে। বাংলাদেশের মানুষ বিগত স্বৈরাচারী যুগে এই বাস্তবতা উপলব্ধি করেছিল, কিন্তু তখন কথা বলার সাহস ছিল না। “ক্লোজেট ল্যান্ড” নাটকটি এ পরিস্থিতির প্রতীকী উচ্চারণ। অপেরা নাট্য সংগঠন গত বছর ডিসেম্বরে তাদের ১৫তম প্রযোজনা হিসেবে রাধা ভরদ্বাজের লেখা এই নাটকটি মঞ্চে এনেছে, যার নির্দেশনা দিয়েছেন সাজ্জাদ সাব্বির।
নাটকটি মানবাধিকার নিয়ে আলোচনা করে এবং আন্তর্জাতিকভাবে এর মঞ্চায়ন হয়েছে। বাংলাদেশে এটি এসেছে অপেরার মাধ্যমে, যখন দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রান্তিকাল পার করছে। ভয়ের সংস্কৃতির আবহে, “ক্লোজেট ল্যান্ড” ভয়ের নির্মাণের বিষয়বস্তু হিসেবে উপস্থিত হয়েছে। নাটকটি নিয়ে আলোচনা হয়নি, কারণ শিল্পাঙ্গন সরকারী প্রতিষ্ঠানের অংশীদার হয়ে ওঠায় নারীদের ও জেন্ডারের প্রশ্নটি উপেক্ষিত হয়েছে।
নাটকের কাহিনী একজন রাজনৈতিক বন্দীকে রিমান্ডে নির্যাতনের ঘটনা। নামহীন এক শিশুসাহিত্যিক এক জিজ্ঞাসাবাদকারী কর্মকর্তার মুখোমুখি হন, এবং শুরু হয় গভীর প্রশ্নোত্তর পর্ব। রাষ্ট্র সন্দেহ করে, যে শিশুতোষ লেখা রাজনৈতিক ক্ষমতাকে আক্রমণ করছে। সেই সন্দেহ প্রমাণিত করতে রাষ্ট্রের বাহিনী সাহিত্যিককে তুলে নিয়ে যায়।
জিজ্ঞাসাবাদকারী কর্মকর্তা এখানে রাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করে। এই নাটকটি প্রকাশ করে কীভাবে একজন তরুণ কবি ভয়ংকর নিপীড়ক হয়ে ওঠে। নাটকের ক্লোজেটে জামাকাপড়ই একমাত্র নিরাপদ সঙ্গী, যেখানে বিপদের বন্ধু হিসেবে হাজির হয় “ফ্রেন্ডলি রুস্টার”। নাট্যকারের নারী পরিচয় এখানে অনেক অদেখা নির্মমতা তুলে ধরেছে।
নাহিদ স্মৃতি ও সাজ্জাদ সাব্বিরের অভিনয়ে নাটকটি সমাজের অসংগতির অন্তরালে রাষ্ট্রযন্ত্রের অন্ধকার দিকগুলো প্রকাশ করে। মিনিমালিস্ট আয়োজনের মাধ্যমে, “ক্লোজেট ল্যান্ড” একটি বিনোদনমূলক সন্ধ্যার মধ্যে রাষ্ট্রের নির্মম বিশ্লেষণ উপস্থাপন করে, যা সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ব্যতিক্রমী।
https://slotbet.online/