তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাত দেশের অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এ খাতের মাধ্যমে লাখো মানুষের জীবিকা চলে, কিন্তু বর্তমানে এ খাতের অভ্যন্তরীণ সংকট ও অস্থিরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মূলত কর্মসংস্থানের অভাব এই অস্থিরতার অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান থাকলে হয়তো আন্দোলনগুলো এতটা বৃহৎ আকার ধারণ করত না এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হতো।
অন্যদিকে, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ব্যাংকিং খাতেরও সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। ব্যাংকগুলোর আর্থিক সক্ষমতা হ্রাস পাওয়ায় শিল্পকারখানাগুলোর চলতি মূলধন সমস্যা, সুতা ও কাঁচামাল আমদানির অসুবিধা এবং অন্যান্য সমস্যাগুলোর সমাধান করা কঠিন হয়ে পড়েছে। দেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির ফলে আরও একটি সংকট সৃষ্টি হয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করতে সরকার যে পরিমাণ অর্থায়ন করেছে, তার অধিকাংশই ডলারে পরিশোধ করতে হচ্ছে, যা অর্থনৈতিক চাপ বাড়াচ্ছে।
শিল্পের নিরাপত্তা এবং ব্যাংকিং সহায়তার অভাবের কারণে শিল্প উদ্যোক্তারা অনেক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। নতুন উদ্যোগ গ্রহণে বর্তমান খরচ পাঁচ গুণ বেড়ে যাওয়ায় বিদ্যমান শিল্পগুলোকে সহায়তা করা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। সরকারের উচিত, শিল্পখাতের জন্য যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রদান করা, ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করা এবং চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ব্যবস্থা করা।
চাঁদাবাজির সমস্যা এখনও পুরোপুরি দূর হয়নি। পণ্যবাহী ট্রাক থেকে চাঁদাবাজির ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন। সরকারের উচিত ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা প্রদান করে তাদের সমস্যাগুলোর সমাধান করা এবং শিল্প খাতের উন্নয়নের জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা।
সার্বিকভাবে, দেশের অর্থনৈতিক ও শিল্প পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে হলে সরকারের উচিত সঠিক পরিকল্পনা ও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা। দেশের শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যাংকিং সহায়তা এবং অন্যান্য প্রণোদনা প্রয়োজনীয়, যা তাদের সমস্যার সমাধান করতে এবং নতুন উদ্যমে শিল্প খাতের উন্নয়নে সহায়তা করবে।