তবে কোচিংয়ের বিশ্বে ব্রাজিলের ভূমিকা অনেকটাই অনুপস্থিত। আধুনিক ফুটবলের উন্নয়ন ও পরিবর্তনের ধারায় ব্রাজিলিয়ান কোচরা কোনোভাবেই নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে পারেনি। এই অবস্থা ব্রাজিলের বর্তমান ফুটবল অবস্থার ওপরও প্রভাব ফেলেছে।
বর্তমান ফুটবল বিশ্বে নিয়ম ও কৌশলের পরিবর্তন অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে। এক সময়ের স্বাধীন ফুটবল এখন নিয়মের শিকলে বাঁধা। বিভিন্ন পরিস্থিতি ও চ্যালেঞ্জের সাথে মানিয়ে নিতে হলে কৌশলগত পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়। গত শতকের শুরুতে ফুটবল খেলায় পেট্রোডলার প্রবাহের ফলে খেলাটি দ্রুত গতির হয়ে ওঠে। মধ্যপ্রাচ্যের প্রচুর অর্থের প্রভাবে খেলাটি অভূতপূর্ব গতিতে চলে আসে। এতে করে কোচদেরও নতুন কৌশল ও গতির সাথে মানিয়ে নিতে হয়েছে। ক্লাব কোচদের পাশাপাশি জাতীয় দলের কোচদেরও এই পরিবর্তনের সাথে সামঞ্জস্য রাখতে হয়েছে।
অতীতে ব্রাজিল ফুটবলের প্রধান কোচদের পারফরম্যান্স বিবেচনায় দেখা যায় যে, তাদের অনেকেই দ্রুত পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে ব্যর্থ হয়েছেন। ২০০২ সালে লুইস ফিলিপ স্কলারির অধীনে ব্রাজিল বিশ্বকাপ জয়ী হলেও, তাঁর পরবর্তী কোচ কার্লোস আলবার্তো পেরেইরা দলের জন্য সাফল্য আনতে ব্যর্থ হন। ব্রাজিলের পরবর্তী কোচ দুঙ্গা, যিনি ১৯৯৪ সালে ব্রাজিলকে বিশ্বকাপ এনে দিয়েছিলেন, তাঁর অধীনে দলটি বেশ সমালোচিত হয়। বিশেষ করে, তাঁর রক্ষণাত্মক কৌশলের কারণে ব্রাজিল ফুটবলের ঐতিহ্যগত নান্দনিকতা অনেকটাই হারিয়ে যায়।
এই সবকিছুর পরেও, ব্রাজিল ফুটবলকে তার স্বর্ণযুগে ফিরিয়ে আনার কোনো শক্তিশালী সংকল্পের অভাব স্পষ্ট। কোচিংয়ের এই বিপর্যয়ের ফলে, ব্রাজিলিয়ান ফুটবল বিশ্বমঞ্চে সেই স্থানে যেতে ব্যর্থ হচ্ছে যেখানে তাদের পূর্বপুরুষরা একসময় রাজত্ব করেছিল।
ব্রাজিলের ফুটবল কোচিংয়ের এই সংকট একটি বড় প্রশ্ন তোলে: কেন তাদের আধুনিক ফুটবল কৌশল ও গতির সাথে মানিয়ে চলতে সমস্যা হচ্ছে? কোচিংয়ের এই অভ্যন্তরীণ সংকটই কি ব্রাজিল ফুটবলের বর্তমান দুরবস্থার প্রধান কারণ? প্রশ্নগুলোর উত্তর যদি সময়মতো না পাওয়া যায়, তবে ব্রাজিলের ফুটবলকে পুনরুদ্ধার করা কঠিন হয়ে উঠতে পারে।