হোটেল গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার জানিয়েছেন, গত রোববার এক হাজার পর্যটক কক্সবাজারে এসে পৌঁছেছেন। সোমবার এ সংখ্যা দেড় হাজারে পৌঁছেছে, এবং আজ মঙ্গলবারের মধ্যে প্রায় চার হাজার পর্যটক কক্সবাজারে আগমন ঘটিয়েছে। বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুই দিনে অন্তত দেড় লাখ পর্যটক আসবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এই দুই দিনের জন্য পাঁচ শতাধিক হোটেলের ৭০ শতাংশ কক্ষ ইতিমধ্যে অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে, যেখানে মোট ১ লাখ ৮৭ হাজার পর্যটকের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।
কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী জানান, সাগরের উত্তাল অবস্থায়, ভারী বর্ষণ ও জলাবদ্ধতার কারণে এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ফলে গত ১ মাস ২২ দিনে কক্সবাজারে পর্যটক আগমন বন্ধ ছিল। এতে শহরের পাঁচ শতাধিক হোটেল-রেস্তোরাঁ, তিন হাজার দোকানপাটসহ পর্যটনের সাথে সম্পর্কিত ১৪টি খাতে ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকার ব্যবসায়িক ক্ষতি হয়েছে, যার মধ্যে হোটেল খাতেই ক্ষতি হয়েছে ৬০ কোটি টাকা। বর্তমানে ব্যবসায়ীরা ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে। সমুদ্র উত্তাল হলেও, পর্যটকরা প্রখর রোদকে উপেক্ষা করে সাগরে নামছেন এবং বালুচরে বসে সমুদ্রের দৃশ্য উপভোগ করছেন। দীর্ঘদিন পর জেটস্কি এবং অন্যান্য জলযান পুনরায় সচল হয়েছে, যা পর্যটকদের কাছে বিশেষ আকর্ষণ হয়ে উঠেছে। অন্যান্য জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান যেমন দরিয়ানগর পর্যটনপল্লি, হিমছড়ি ঝরনা, ইনানী সৈকত, টেকনাফ সৈকত, রামুর ঐতিহাসিক রামকোট মন্দির, বৌদ্ধপল্লি, মহেশখালী আদিনাথ মন্দির ও চকরিয়ার ডুলাহাজারা সাফারি পার্কেও পর্যটকরা ভিড় করেছেন।
রাজধানীর মগবাজার থেকে ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন স্ত্রী ও তিন সন্তানসহ সৈকত ভ্রমণে এসেছেন। তিনি বলেন, “দেশে এক মাসের বেশি সময় ধরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি চলছে। তবে নিরিবিলি পরিবেশে সময় কাটানোর জন্য কক্সবাজারে এসেছি।” তিনি জানান, বৃহস্পতিবার রাতের বাসে তারা ঢাকায় ফিরে যাবেন এবং তার আগে জেলার বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্র ঘুরে দেখবেন।
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজারের (টুয়াক) সভাপতি তোফায়েল আহমদ বলেন, “দীর্ঘ ৫০ দিন বিনোদনকেন্দ্রগুলো ফাঁকা ছিল। এখন পর্যটকদের পদচারণায় কিছুটা জমে উঠেছে।”
হোটেল লং বিচ, সি প্যালেস, হোটেল সি-গাল, কক্স টুডে, হোটেল কল্লোল, প্রাসাদ প্যারাডাইস, মিডিয়া ইন্টারন্যাশনাল, সি ওয়ার্ল্ডসহ অন্তত ৪৫টি হোটেল-গেস্টহাউস-রিসোর্টে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ ১১ শতাংশ কক্ষে অতিথি রয়েছেন। আগামী রোববার পর্যন্ত ছয় দিনে তিন লাখ পর্যটকের সমাগম ঘটতে পারে। পর্যটকদের আকর্ষণ করার জন্য কক্ষভাড়ার ওপর সর্বোচ্চ ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হচ্ছে।