• বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ০৮:২৬ অপরাহ্ন

তৎপর হয়ে উঠেছে দুদক: অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান

Reporter Name / ৪৫ Time View
Update : শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতে নানা পরিবর্তনের পর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করতে তৎপর হয়ে উঠেছে। সাম্প্রতিক সময়ে প্রভাবশালী ৩১ জন ব্যক্তির অবৈধ সম্পদ অর্জনের তথ্য হাতে থাকা সত্ত্বেও বিগত সময়ে রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে দুদক তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি। এখন অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে দুদক এই প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং ইতিমধ্যে কিছু অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

এই প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সাবেক সংসদ সদস্য এবং প্রয়াত মন্ত্রীর পুত্র অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে দুদক তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়েছিল, কিন্তু সরকারের রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে তখন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।

সাবেক মন্ত্রীদের মধ্যে শাজাহান খান, সাইফুজ্জামান চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার এবং গাজী গোলাম দস্তগীরসহ আরো কয়েকজনের নাম রয়েছে। সাবেক প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে মাহবুব আলী, মেহের আফরোজ চুমকি, এনামুর রহমান এবং নসরুল হামিদ উল্লেখযোগ্য। সাবেক সংসদ সদস্যদের মধ্যে মোস্তাফিজুর রহমান, অসীম কুমার উকিল এবং মানু মজুমদার রয়েছেন। এছাড়া প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিমের পুত্র তমাল মনসুরের নামও রয়েছে।

দুদকের সূত্র জানায়, এদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে। অনুসন্ধানে আসাদুজ্জামান খান, আ হ ম মুস্তফা কামাল, ও বিভিন্ন সাবেক সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে বিশেষভাবে নজর দেওয়া হচ্ছে। অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে তাঁদের সম্পদের উৎস, আর্থিক লেনদেন এবং বৈদেশিক সম্পদের তথ্য যাচাই করা হচ্ছে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া এবং অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। আসাদুজ্জামান মিয়া ও তাঁর পরিবার ও পরিবারের সদস্যদের নামে বিশাল পরিমাণ সম্পদের অভিযোগ রয়েছে, আর হারুন অর রশিদ যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে একটি দামি বাড়ি কিনেছেন।

তবে, রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর দুদকের নতুন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ ও অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তারা প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছেন। ১৫০ জন প্রভাবশালী ব্যক্তির একটি প্রাথমিক তালিকা তৈরি করা হয়েছে, যার মধ্যে ৭৯ জনের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বিগত সময়ের পরিস্থিতি বিবেচনায় দুদকের বর্তমান সক্রিয়তা রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রেক্ষিতে আসা পরিবর্তনের অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নিষ্ক্রিয়তা পরবর্তী সময়ে দুদকের বর্তমান তৎপরতা কতটা প্রকৃত কার্যকর, তা পর্যালোচনার দাবি রাখে।

এ অবস্থায়, দুদককে আরও কার্যকরভাবে পরিচালনা করা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সফলভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করা নিশ্চিত করতে পূর্ণাঙ্গ সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।


More News Of This Category
https://slotbet.online/