• শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ০৪:৪১ পূর্বাহ্ন

বন্যার তাণ্ডবে দেড় লাখের বেশি বসতঘর ধ্বংস বন্যার তাণ্ডবে দেড় লাখের বেশি বসতঘর ধ্বংস

Reporter Name / ৭১ Time View
Update : শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বন্যার তীব্রতার কারণে নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার নরোত্তমপুর গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন (৫০) তার পরিবার নিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছিলেন। পাঁচ দিন পর তিনি বাড়ি ফিরে দেখেন, তার বসতঘরটি সম্পূর্ণভাবে ধসে গেছে। বন্যার পানি ঘরের ভিটা থেকে মাটি নিয়ে গেছে, এখন সেখান শুধু কাদা ছাড়া কিছুই নেই। ফলে, তার স্ত্রী ও তিন সন্তানকে তিনি শ্বশুরবাড়িতে পাঠাতে বাধ্য হয়েছেন।

এই ধরনের ক্ষতির শিকার জেলার আটটি উপজেলায় প্রায় দেড় লাখ পরিবারের বসতঘর। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, বন্যায় প্রাথমিকভাবে ৮ হাজার ৪৫৩টি ঘর সম্পূর্ণভাবে এবং ১ লাখ ৪৬ হাজার ৪৭২টি ঘর আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষভাবে বেগমগঞ্জ, সেনবাগ, নোয়াখালী সদর, সোনাইমুড়ী ও চাটখিল উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, আর কবিরহাট, কোম্পানীগঞ্জ ও সুবর্ণচর উপজেলায় ক্ষতির পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম।

সেনবাগ উপজেলার কাদরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া শাহিদা আক্তার বাড়ি ফিরে দেখতে পান, তার একচালা বসতঘরটি সামান্য হেলে গেছে এবং খুঁটির নিচে মাটি সরে গেছে। ঘরের ভেতরে অবস্থান করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। শাহিদা ও তার তিন সন্তান বর্তমানে প্রতিবেশী এক ব্যক্তির বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। তার স্বামী রিকশাচালক, যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চালানোই তার জন্য চ্যালেঞ্জিং। এখন ঘর মেরামতের জন্য অর্থের অভাব তার উদ্বেগের প্রধান কারণ।

আরেক বাসিন্দা জানোরা বেগম (৫২) জানান, তার বসতঘরের ভিটা থেকে মাটি ধুয়ে গেছে এবং ঘর যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। ঘর মেরামতের জন্য তার কাছে কোনো অর্থ নেই এবং সাধারণত তিনি পাড়া-প্রতিবেশীদের সহায়তায় চলেন।

বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমান জানান, উপজেলার অনেক এলাকা এখনও বন্যার পানির নিচে রয়েছে। বিশেষ করে নরোত্তমপুর ইউনিয়নে ত্রাণ বিতরণকালে তিনি লক্ষ্য করেন, অধিকাংশ রাস্তা হাঁটুপানির নিচে ডুবে রয়েছে এবং বাড়িঘরেও পানি জমে রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা এই অবস্থায় সীমাহীন কষ্টে আছেন।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. জাহিদ হাসান খান বলেন, জেলার বিভিন্ন এলাকায় বন্যার পানি এখনও কমেনি এবং এটি স্থায়ী জলাবদ্ধতায় পরিণত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, বন্যায় ১ লাখ ৫৪ হাজার ৯২৫টি বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এই তথ্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।


More News Of This Category
https://slotbet.online/