বৃহস্পতিবার এক ওয়েবিনারে ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মান্নান দাবি করেছেন, পদত্যাগপত্রে সই নেওয়ার সময় তাঁকে জোর করা হয়েছিল। তিনি উল্লেখ করেন, যে প্যাডে তাঁর সই নেওয়া হয়েছে তা ইসলামী ব্যাংক ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে কখনও ব্যবহার করেনি। অর্থাৎ, এই প্যাডের মাধ্যমে পদত্যাগপত্র নেয়া হয় যা ব্যাংকটির আসল নথির সাথে মেলে না।
ওয়েবিনারের আয়োজক ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজের অধীনে আবদুল মান্নান আরও বলেন, ওইদিন (৫ জানুয়ারি, ২০১৭) বাংলাদেশ ব্যাংক রাতে অফিসে থেকে মালিকানা পরিবর্তনের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে বাধ্য হয়। তিনি প্রশ্ন তোলেন, এমন ঘটনার প্রেক্ষাপটে একটি দেশের ব্যাংকিং খাতে কি ঘটছে—যেখানে দেশের অর্থনীতি এবং জনগণের স্বার্থ জড়িত।
এছাড়া, তিনি বলেন, পরবর্তী কয়েক বছরে বাংলাদেশ ব্যাংক এস আলম গ্রুপের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের জন্য নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি রোধ করতে হবে।
বিদেশে থাকা অবস্থায় নিরাপত্তাহীনতায় ভোগার কথা উল্লেখ করে আবদুল মান্নান জানান, দেশে ফেরার পর তিনি মনে করেন, এখন কথা বলার স্বাধীনতা পেয়েছেন। তবে সম্পূর্ণ মুক্তি পেতে আরও সময় লাগবে।
ব্যাংকিং খাতে দুর্নীতি এবং রাজনীতির অপসারণ বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশের অবনতি ব্যাংকিং এবং আর্থিক খাতের দুর্বৃত্তায়নের মূল কারণ। তাঁর মতে, জনগণের কল্যাণের পরিবর্তে রাজনৈতিক গোষ্ঠীর স্বার্থসাধনের জন্য রাজনীতি পরিচালিত হচ্ছে। ইসলামী ব্যাংক দখলের পিছনে রাজনৈতিক নির্দেশনা ও রাজনীতিকদের সরাসরি হস্তক্ষেপ ছিল বলে তিনি অভিযোগ করেছেন।
বদিউল আলম মজুমদার আরও মন্তব্য করেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে লোকদেখানো নির্বাচন ও পরে সুষ্ঠু নির্বাচন না হওয়ার কারণে অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের দখলদারিত্বের ঘটনা ঘটেছে। তিনি মনে করেন, রাজনৈতিক সংস্কার না হলে এবং সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে না।