নিউমার্কেট এলাকায় নিহত হকার শাহজাহান আলীর হত্যামামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার এজাহারে দাবি করা হয়েছিল কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা, জামায়াত-শিবির এবং বিএনপির সশস্ত্র সদস্যরা শাহজাহান আলীর ওপর আক্রমণ করেছে। অথচ মামলার বাদী আয়েশা বেগমের দাবি, তার ছেলেকে সরকারি লোকজন গুলি করে হত্যা করেছে।
একই দিনে, নিহত ছাত্রলীগ কর্মী ঢাকা কলেজের ছাত্র সবুজ আলীর জানাজা অনুষ্ঠিত হয় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। এই হত্যাকাণ্ডের জন্য উসকানিদাতা হিসেবে আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমানকে আসামি করা হয়েছে।
১৯ জুলাই পল্টন এলাকায় নিহত রিকশাচালক কামাল মিয়ার স্ত্রী ফাতেমা খাতুন জানান, মামলার বিষয়ে তার কোনো ধারণা ছিল না। লাশ বুঝে নেওয়ার সময় পুলিশের বিভিন্ন কাগজে সই নিয়েছিল। পরে জানা যায় যে, তার স্বামী পুলিশ গুলিতে নিহত হয়েছেন। যেখানে কামাল মিয়া পুলিশের গুলিতে মারা গেছেন, সেখানে বিএনপি-জামায়াত এবং আওয়ামী লীগের নেতাদের আসামি করার পেছনে রহস্য কী?
ঢাকার উদাহরণ ছাড়াও সারা দেশে এ ধরনের মামলার সংখ্যা বেড়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মীরা জানতে চেয়েছেন, পুলিশ যদি আগে আওয়ামী লীগকে খুশি করার জন্য বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে মামলা করত, তবে এখন তারা কাদের খুশি করছে? অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলার স্বচ্ছতা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হচ্ছে, যা ন্যায়বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে বড় বাধা।
বিগত সরকারের আমলে ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে অবৈধ অর্থ উপার্জন, ব্যাংক থেকে অর্থ লোপাট এবং বিদেশে পাচারের গুরুতর অভিযোগ ছিল। এই বিষয়গুলোর বিচার না করে, যাদের ধরা পড়ছে, তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা পুরোনো পুলিশী কর্মসংস্কৃতিরই প্রতিচ্ছবি মনে হচ্ছে।