• রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ০২:৫৯ অপরাহ্ন

১০ লাখ পরিবার পানিবন্দী: বন্যার পরিস্থিতি ও উদ্ধার কার্যক্রম

Reporter Name / ৫৫ Time View
Update : রবিবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৪

বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যার পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে, তবে পরিস্থিতি এখনও বেশ সংকটজনক। সম্প্রতি বৃষ্টির পরিমাণ কমার ফলে অনেক জায়গায় পানি নামতে শুরু করলেও, ফেনী, নোয়াখালী, এবং কুমিল্লার বেশ কিছু এলাকাতে পরিস্থিতি এখনও ভয়াবহ রয়েছে। বিশেষ করে ফেনীর গ্রামাঞ্চলে এক লাখেরও বেশি মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছেন। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ফেনীর বন্যাকবলিত এলাকাগুলোর মুঠোফোন নেটওয়ার্ক অকার্যকর থাকায় প্রকৃত পরিস্থিতি সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি।

বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে শুকনা খাবার ও সুপেয় পানির সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। বহু স্বেচ্ছাসেবী ত্রাণ নিয়ে পৌঁছাতে পারছেন না, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে। সরকারী তথ্যানুযায়ী, বন্যার ফলে দেশে গতকাল পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামে ৫ জন, কুমিল্লায় ৪ জন, নোয়াখালীতে ৩ জন, কক্সবাজারে ৩ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১ জন, ফেনীতে ১ জন ও লক্ষ্মীপুরে ১ জন মারা গেছেন।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০ আগস্ট থেকে গতকাল পর্যন্ত দেশের ১১টি জেলা বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। এই জেলার মধ্যে ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজার অন্তর্ভুক্ত। মোট ৭৭টি উপজেলায় বন্যার প্রভাব দেখা যাচ্ছে, এবং প্রায় ৯ লাখ ৮০ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫১ লাখ।

মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, কুমিল্লা, ফেনী, চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়িতে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট উদ্ধার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ফেনীর গ্রামাঞ্চলে লাখো মানুষ এখনও আটকে রয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উদ্ধারকারী দল গতকাল ফেনী থেকে ২৭ জনকে উদ্ধার করেছে, তবে প্রায় এক লাখ মানুষ এখনও পানিবন্দী।

বন্যার কারণে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া, কক্সবাজার ও লক্ষ্মীপুরের কিছু অঞ্চলে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও, খাদ্য ও সুপেয় পানির সংকট অব্যাহত রয়েছে। কুমিল্লায় গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় বুড়িচং উপজেলার ১০৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে এক লাখ ৭৫ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এবং ১০ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় নতুন করে বন্যার পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে, যেখানে ২৬টি গ্রামের ১৫ হাজার ৫০০ মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় আছেন। যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, যা উদ্ধার কার্যক্রমকে আরও কঠিন করেছে।

বর্তমানে ৩ হাজার ৫১৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে, যেখানে ৩ লাখ ১ হাজার ৯৯৩ জনকে আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। বন্যার পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসক, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, মেডিকেল টিম এবং অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকদের সমন্বয়ে কাজ চলছে।


More News Of This Category
https://slotbet.online/