• শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ০৭:১৮ অপরাহ্ন

গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত

Reporter Name / ৪২ Time View
Update : শনিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৪

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের বুড়বুড়িয়া এলাকায় গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙে অন্তত ১৫টি গ্রাম জলমগ্ন হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১২টার দিকে বাঁধটি ভেঙে যাওয়ার ফলে এই বিপর্যয় ঘটে। এ ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে ছুটাছুটি করতে গিয়ে দুজন আহত হয়েছেন।

প্লাবিত গ্রামগুলোর মধ্যে রয়েছে বুড়বুড়িয়া, খাড়াতাইয়া, নানুয়ার বাজার, কিং বাজেহুরা, মিথিলাপুর, শিকারপুর, মহিষমারা, ইছাপুরা, পয়াত, গাজীপুর, কণ্ঠনগর, মাওরা, গোপীনাথপুর, জগৎপুর এবং গোসাইপুর।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জমান জানিয়েছেন, গতকাল সন্ধ্যা থেকে ওই স্থানের নিচ দিয়ে পানি বের হতে থাকে। স্থানীয়রা বালুর বস্তা ফেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু রাত পৌনে ১২টার দিকে বাঁধ ভেঙে গিয়ে পানির স্রোত লোকালয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করে।

পাউবো কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, গত দুই দিনে নদীর পানির স্তর অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে। গতকাল বিকেলে পানি বিপৎসীমার ১১৩ সেন্টিমিটার অতিক্রম করে, যা ১৯৯৭ সালের পানির স্তরের ৯৬ সেন্টিমিটার উপরে ছিল।

বাঁধ ভাঙনের খবর পেয়ে আশপাশের শতাধিক পরিবার নিজেদের ঘর থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল আটটায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বুড়বুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দারা বাড়িঘর হারিয়ে হতবিহ্বল অবস্থায় রয়েছেন।

বুড়বুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা ও সংবাদকর্মী গোলাম কিবরিয়া জানান, তাঁর বাড়িঘর সম্পূর্ণরূপে পানিতে তলিয়ে গেছে। এ নিয়ে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। গ্রামবাসী জানিয়েছেন, রাত সাড়ে ১১টার দিকে নদীর পানিতে ঘূর্ণন শুরু হয় এবং তারপর বাঁধটি ভাঙতে শুরু করে। প্রথমে ১০ ফুট, পরে ২০ ফুট করে বাঁধ ভেঙে যায়।

নানুয়ার বাজার গ্রামের গৃহবধূ আইরিন আক্তার জানান, কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাঁদের পরিবারকে ঘর ছাড়তে হয়েছে। তিনি কান্না করতে করতে বলেন, “১২ বছরের সংসার সাজানো–গোছানো ছিলো, পানি সব নিয়ে গেছে।”

একই এলাকার বাসিন্দা সোমা রানী রাতে কোলের শিশুকে নিয়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তাঁর বাড়িঘরও পানিতে ডুবে গেছে এবং এখন কোথায় থাকবেন সেই চিন্তায় দিশাহারা অবস্থায় রয়েছেন।

গোমতীর বাঁধের আশেপাশে ভান্তি, কামারখাড়া ও বালিখাড়া অংশে পাঁচ শতাধিক পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। এসব পরিবারের বাড়িঘরে পানি প্রবাহিত হয়েছে এবং শিশুদের মধ্যে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে পর্যাপ্ত খাবার নেই এবং দ্রুত শুকনো খাবার ও পানির প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন তারা।

বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাহিদা আক্তার জানিয়েছেন, বাঁধ ভেঙে যাওয়ার শঙ্কায় স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার জন্য গতকাল সন্ধ্যা থেকেই মাইকিং করা হচ্ছিল।


More News Of This Category
https://slotbet.online/