• বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ০৮:৩৯ অপরাহ্ন

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ: ১৭ বছর পর আবার চ্যাম্পিয়ন ভারত

ডেস্ক রিপোর্ট / ৩৯ Time View
Update : শনিবার, ২৯ জুন, ২০২৪

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৭ রানে হারিয়ে ১৭ বছর পর দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হলো ভারত। ২০০৭ সালে প্রথমবারের মতো এই শিরোপা জয় করার পর এটি ভারতের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়। ভারতের হয়ে বীরত্ব দেখিয়েছেন যশপ্রীত বুমরা এবং বিরাট কোহলি, যারা নিজেদের অসাধারণ পারফরম্যান্স দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার হাত থেকে জয় ছিনিয়ে এনেছেন।

ভারতের ইনিংস: কোহলির অনবদ্য ব্যাটিং

টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে ভারত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭৬ রান করে। যদিও ইনিংসের শুরুটা মোটেও ভালো ছিল না। প্রথম ওভারে রোহিত শর্মা এবং ঋষভ পন্তের দ্রুত উইকেট পতনে দল ব্যাকফুটে চলে যায়। রোহিত মাত্র ৯ রান করে আউট হন এবং পন্ত কোনো রান না করেই ফিরে যান।

তবে এরপর ভারসাম্য ধরে রাখেন বিরাট কোহলি এবং সূর্যকুমার যাদব। সূর্যকুমার ৩ রান করে আউট হলেও, কোহলি ক্রিজে থেকে দলকে টেনে নেন। তিনি ৪৮ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করেন এবং ইনিংস শেষ করেন ৫৯ বলে ৭৬ রান করে। কোহলির ইনিংসে ছিল ৬টি চারের পাশাপাশি ২টি বিশাল ছক্কা। তাকে সঙ্গ দেন অক্ষর প্যাটেল, যিনি ৩১ বলে ৪৭ রানের মূল্যবান ইনিংস খেলেন।

শিবম দুবের ১৬ বলে ২৭ রানের ক্যামিওতে ভারত শেষ পর্যন্ত ১৭৬ রান সংগ্রহ করে, যা ফাইনালে ভারতের সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, যশপ্রীত বুমরা, বিরাট কোহলি, হার্দিক পান্ডিয়া, চ্যাম্পিয়ন

দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস: ক্লাসেন-মিলারের লড়াই

১৭৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস শুরুটা মোটেও ভালো ছিল না। পাওয়ারপ্লেতে রিজা হেনড্রিকস এবং এইডেন মার্করাম দ্রুত আউট হন। তবে কুইন্টন ডি কক এবং তরুণ ট্রিস্টান স্টাবস দলের জন্য কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। স্টাবসের ২১ বলে ৩১ রানের ইনিংস এবং ডি ককের ৩৯ রানের ইনিংসটি দলকে কিছুটা স্বস্তি দেয়।

কিন্তু আসল প্রতিরোধ গড়ে তোলেন হাইনরিখ ক্লাসেন এবং ডেভিড মিলার। ক্লাসেন মাত্র ২৩ বলে তার অর্ধশত পূর্ণ করেন এবং মিলার তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন। ক্লাসেনের ২৭ বলে ৫২ রানের ইনিংসে ছিল ২টি চার এবং ৫টি ছক্কা, যা দক্ষিণ আফ্রিকাকে জয়ের দোরগোড়ায় নিয়ে যায়।

 বুমরার ডেথ বোলিং: ম্যাচের মোড় ঘোরানো মুহূর্ত

ম্যাচের ক্রান্তিলগ্নে যশপ্রীত বুমরা তার ডেথ বোলিংয়ে অসাধারণ দক্ষতা প্রদর্শন করেন। শেষ স্পেলে তিনি ২ ওভারে মাত্র ৬ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন। বিশেষ করে ডেথ ওভারে তার সঠিক ইয়র্কার এবং ধীরগতির বলগুলি দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানদের জন্য কঠিন করে তোলে।

শেষ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়োজন ছিল ১৬ রান, কিন্তু হার্দিক পান্ডিয়ার প্রথম বলেই ডেভিড মিলার আউট হয়ে যান সূর্যকুমার যাদবের রিলে ক্যাচে। সেই ওভারেই কাগিসো রাবাদাকে আউট করে পান্ডিয়া দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস শেষ করে দেন ৮ উইকেটে ১৬৯ রানে।

ভারতীয় বোলারদের বীরত্ব

যশপ্রীত বুমরা এবং হার্দিক পান্ডিয়া দুজনই নিজেদের দায়িত্ব অত্যন্ত ভালোভাবে পালন করেছেন। বুমরা ৪ ওভারে ১৮ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন, আর পান্ডিয়া ৩ উইকেট তুলে নেন ২০ রানে। তাদের পাশাপাশি অর্শদীপ সিং এবং অক্ষর প্যাটেলও নিজেদের ভূমিকা ভালোভাবে পালন করেছেন।

কোহলির অবসরের ঘোষণা

ম্যাচ শেষে ভারতীয় দলের ক্যাপ্টেন বিরাট কোহলি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন। এটি তার জন্য একটি আবেগঘন মুহূর্ত ছিল এবং সমর্থকরা তাকে বিদায়ী অভিবাদন জানান। এই ফাইনাল ম্যাচে তার অনবদ্য ব্যাটিং পারফরম্যান্স তাকে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার এনে দেয়।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এই স্মরণীয় ফাইনালটি ভারতের জন্য বিশেষ করে বিরাট কোহলির জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হয়ে থাকবে। দক্ষিণ আফ্রিকার দলটি ভালো খেললেও, ভারতের অসাধারণ বোলিং এবং ব্যাটিং পারফরম্যান্স তাদের টুর্নামেন্ট জিততে সাহায্য করেছে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
– ভারত: ২০ ওভারে ১৭৬/৭ (কোহলি ৭৬, অক্ষর ৪৭, দুবে ২৭; মহারাজ ২/২৩, নর্কিয়া ২/২৬, রাবাদা ১/৩৬)
– দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ১৬৯/৮ (ক্লাসেন ৫২, ডি কক ৩৯, স্টাবস ৩১; পান্ডিয়া ৩/২০, বুমরা ২/১৮, অর্শদীপ ২/২০)
– ফল: ভারত ৭ রানে জয়ী।
– ম্যান অব দ্য ম্যাচ: বিরাট কোহলি।
– ম্যাচ অব দ্য টুর্নামেন্ট: যশপ্রীত বুমরা।


More News Of This Category
https://slotbet.online/