• রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ০২:২৪ পূর্বাহ্ন

ব্যাংক ও রাজস্ব খাতে সংস্কারের আহ্বান: ব্যবসায়ীদের দাবি

Reporter Name / ৩৯ Time View
Update : মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট, ২০২৪

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি এবং শিল্পকারখানার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতারা। আজ বিকেলে ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী মতবিনিময়ে এসব দাবি তুলে ধরেন।

সভায় ব্যবসায়ীরা ব্যাংক খাত এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সংস্কারের দাবি করেন। তাঁরা ব্যাংক লুটপাটের সংবাদ দেখিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন যে, যদি এক-দুজন ব্যবসায়ীর বিপুল পরিমাণ টাকা ব্যাংক থেকে চলে যায়, তবে বাকিরা কীভাবে অর্থ পাবেন।

রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এই সভায় আইসিসি বাংলাদেশের নেতাদের প্রতিনিধিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি মাহবুবুর রহমান। সভায় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, সহসভাপতি এ কে আজাদ ও নাসের এজাজ বিজয়, এবং অন্যান্য সদস্যরা।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সভার শেষে বলেন, “আমরা একটি অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি। তবে এটি একটি বড় সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করা যেতে পারে। আমাদের কাজ কঠিন, তবে আমরা সম্ভাবনাময়। বাংলাদেশের যদি একটি জাতি হিসেবে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে এই বিশৃঙ্খলা কাটিয়ে উঠতে পারি, তাহলে বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করব।”

আইসিসি বাংলাদেশের নেতারা অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য ধীর প্রকৃতির সংস্কারের আহ্বান জানান। তাঁরা উল্লেখ করেন যে, বিদায়ী সরকার দেশের অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত অবস্থায় রেখে গেছে এবং ব্যাংক খাত, রাজস্ব প্রশাসন, শিক্ষা ও শিল্পে ব্যাপক সংস্কার প্রয়োজন।

আইসিসি বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, “আমরা গত ১৫ বছরে যা ঘটেছে, তার প্রত্যক্ষদর্শী। বেসরকারি খাত সম্পূর্ণরূপে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রয়েছে।”

ড. ইউনূস ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলকে বলেন, “জাতি হিসেবে মহানুভবতা অর্জন করতে হলে আমাদের চিন্তার ভেতর থেকে বের হতে হবে। যদি আমরা তরুণদের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে পারি, তাহলে আমরা জাতির স্বপ্ন পূরণ করতে পারব।”

সভায় উপস্থিত ব্যবসায়ী নেতারা ১৩ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন, যার মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, ব্যাংক ও এনবিআর সংস্কার, জ্বালানি খাতের সংস্কার, তথ্যপ্রযুক্তি খাত শক্তিশালীকরণ, বিদেশি মিশনের সক্ষমতা বৃদ্ধি, এবং বাণিজ্য সংগঠনের সংস্কার অন্তর্ভুক্ত।

চাঁদাবাজি বন্ধ করার দাবিতে তাঁরা বলেন, সরকার বদলেছে কিন্তু নতুন গ্রুপগুলো চাঁদাবাজি শুরু করেছে। শিল্পকারখানা ও অর্থনৈতিক অঞ্চলে যৌথ বাহিনীর মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুনরুদ্ধারের আহ্বান জানান।

ব্যাংক খাতের সংস্কারের বিষয়ে মাহবুবুর রহমান বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করতে হবে। খেলাপি ঋণ কমানোর জন্য একটি রূপকল্প তৈরি করতে হবে এবং ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার জন্য কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন।”

ব্যবসায়ী নেতারা প্রধান উপদেষ্টাকে অনুরোধ করেন যে, প্রকৃত ঋণখেলাপি এবং ব্যাংক লুটপাটকারীদের একই কাতারে ফেলা উচিত নয়। তাঁরা উল্লেখ করেন, উভয় পক্ষকে একসঙ্গে বিবেচনা করলে ব্যাংক লুটকারীদের শাস্তি কম হবে এবং প্রকৃত ঋণখেলাপির শাস্তি বেড়ে যাবে।

ড. ইউনূস ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের লিখিত তথ্য দেওয়ার অনুরোধ করেন এবং আইসিসি বাংলাদেশের একজন সদস্য তথ্য প্রদান করার প্রতিশ্রুতি দেন।


More News Of This Category
https://slotbet.online/