বাংলাদেশে, বিশেষ করে স্বাস্থ্য শিক্ষার ক্ষেত্রে, ভারতীয় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে ভারতে ফিরে আসা কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশে পড়াশোনার জন্য আসছেন, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ, কাশ্মীর ও উত্তর-পূর্ব ভারতের শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বেশি।
কিশোরগঞ্জের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সুদীপ্ত মাইতি পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা। তিনি বলেন, কয়েক বছর আগে বাংলাদেশে পড়তে আসা ভারতীয় শিক্ষার্থীর সংখ্যা এখন অনেক বেড়েছে এবং বর্তমানে এটি কয়েক হাজারে দাঁড়িয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্প্রতি ভারতীয় সংসদে জানান, বাংলাদেশে ৯ হাজার ভারতীয় শিক্ষার্থী পড়ছেন। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কারণে তাঁদের বড় একটি অংশ জুলাই মাসে ভারতে ফিরে এসেছেন।
সুদীপ্ত জানান, ভারতীয় শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের বেসরকারি মেডিকেল কলেজে পড়ার সুবিধা উপলব্ধি করে আসছেন। বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির কারণে, এক দেশের শিক্ষার্থীরা অন্য দেশে যাওয়া-আসা করতে পারে খুব সহজেই। অন্য দেশ যেমন রাশিয়া, ইউক্রেন, বা চীন থেকে পড়তে আসার ক্ষেত্রে এভাবে সুবিধা পাওয়া যায় না।
কাশ্মীরের এক ছাত্রী, যিনি নিজের নাম ‘কাজি’ উল্লেখ করেছেন, বলেন, বাংলাদেশের পড়াশোনা ও খরচ তার জন্য প্রধান কারণ। ২০১৯ সালে তিনি ঢাকার আদ্-দ্বীন মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। কাশ্মীরে তখন মাত্র দুটি সরকারি মেডিকেল কলেজ ছিল এবং কোনো প্রাইভেট কলেজ ছিল না। বাংলাদেশে তখন অনেকগুলো বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ছিল, যা তাকে ও তার বন্ধুদের বাংলাদেশে পড়ার সিদ্ধান্ত নিতে উৎসাহিত করেছে।
কলকাতার শিক্ষা পরামর্শদাতা কাজী মহম্মদ হাবিব ভারতীয় শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশের মেডিকেল কলেজে ভর্তিতে সহায়তা করেন। তাঁর সংস্থা চেকমেট ভারতীয় শিক্ষার্থীদের কাগজপত্র প্রস্তুত করতে ও কলেজে ভর্তি হতে প্রয়োজনীয় সব কাজ করে দেয়। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৭০টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ রয়েছে এবং এগুলোর সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে। তবে দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটের কারণে এই প্রবণতা কিছুটা কমতে পারে।
বেসরকারি মেডিকেল কলেজে পড়াশোনার খরচ কম থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে কাশ্মীরের ছাত্রীরা বলেন, ভারতে বেসরকারি মেডিকেল কলেজে পড়ার জন্য প্রায় এক কোটি রুপি খরচ হয়, যা বাংলাদেশে তুলনামূলকভাবে অনেক কম। ঢাকার বাইরে ছোট শহরগুলোতে এই খরচ ৩০-৩৫ লাখ রুপি সমপরিমাণ হতে পারে।
ভারতীয় শিক্ষার্থীরা বলেন, খরচ কম থাকা এবং উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে বাংলাদেশে পড়াশোনার প্রতি তাদের আগ্রহ বাড়ছে। তবে, বাংলাদেশে পড়াশোনার মান খারাপ নয় বলে তারা উল্লেখ করেন।
https://slotbet.online/