• শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ০৬:২৩ অপরাহ্ন

সরকারি ঋণ ও সরবরাহব্যবস্থার দুর্বলতা: মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির কারণ

Reporter Name / ৪৪ Time View
Update : রবিবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৪

সম্প্রতি বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উপর গুরুতর প্রভাব ফেলেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, জুলাই মাসে মূল্যস্ফীতি ১১.৬৬ শতাংশে পৌঁছেছে এবং খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। এসব পরিসংখ্যানের আলোকে, অর্থ মন্ত্রণালয় সম্প্রতি মূল্যস্ফীতির বৃদ্ধির জন্য সরাসরি দায়ী করেছে গত সরকারের অর্থনৈতিক নীতিগুলিকে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরকার অত্যাধিক পরিমাণে ঋণ নিয়েছে, যা নতুন টাকা বাজারে আসার কারণে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পেতে সাহায্য করেছে। দীর্ঘ সময় ধরে সরকার এই ঋণ নিয়ে চলেছে, যার ফলে বাজারে টাকার সরবরাহ বেড়ে গিয়ে জিনিসপত্রের দামও বেড়েছে। বিদায়ী গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংকও এই ঋণ প্রদান করেছে, যা মূল্যস্ফীতির একটি প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

সরকারের ঋণের পরিমাণ কত তা স্পষ্ট করে জানানো হয়নি, তবে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায় যে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকার ব্যাংক খাত থেকে ৯৪ হাজার ২৮২ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। এর আগে ওভারড্রাফট সীমা ছিল মাত্র ছয় হাজার কোটি টাকা, যা পরে বেড়ে গিয়ে ১২ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছেছে।

অর্থ বিভাগ প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করেছে যে, দেশে খাদ্যপণ্য উৎপাদন পরিস্থিতি বেশ ভালো এবং আমদানির ফলে চাল ও পেঁয়াজের মজুতও সন্তোষজনক। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে এবং সারের দামও এক-তৃতীয়াংশ কমে গেছে। সয়াবিন তেলের দাম দুই বছর আগের তুলনায় অর্ধেকে নেমেছে। এই অবস্থার পরও মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, যা সরবরাহব্যবস্থার দুর্বলতা ও আমদানিজনিত মূল্যস্ফীতির কারণে হতে পারে।

আর্থিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের চাহিদার তুলনায় খাদ্যপণ্য সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই। অথচ দামের পার্থক্য এবং বাজারে সরবরাহব্যবস্থার দুর্বলতা মূল্যস্ফীতির বৃদ্ধির জন্য দায়ী। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মোস্তফা কে মুজেরী এই বিষয়ে মন্তব্য করে বলেন যে, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সরকারকে ঋণ নেওয়ার পরিমাণ কমানো এবং মুদ্রানীতি কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

মৌলিকভাবে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অর্থনৈতিক নীতি ও ব্যাংকিং ব্যবস্থার মধ্যে সঙ্গতি থাকা জরুরি। সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক যদি একসঙ্গে কাজ করে, তবে মূল্যস্ফীতি সহনশীল স্তরে নামানো সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।


More News Of This Category
https://slotbet.online/