• শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ০৩:২৬ পূর্বাহ্ন

সংবিধান সংশোধন ও ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ: প্রয়োজনীয়তা ও প্রস্তাবনা

Reporter Name / ৩৫ Time View
Update : শুক্রবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৪

বর্তমান সংবিধান বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষার কিছু প্রতিফলন ধারণ করে। কিন্তু এতে কিছু আইনি ধারার মাধ্যমে সেই আকাঙ্ক্ষাকে অগ্রাহ্য করা হয়েছে। বিশেষ করে, সংবিধানে একজন ব্যক্তি বিশাল ক্ষমতার অধিকারী হয়ে আছেন, যা স্বৈরাচারের জন্ম দিতে সহায়তা করে। তাই সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ একটি জরুরি পদক্ষেপ বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনেরা।

শুক্রবার বিকেলে ঢাকার ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ‘অংশগ্রহণমূলক গণপাঠ: এরপর কী’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব মতামত উঠে আসে। সমাজতান্ত্রিক বুদ্ধিজীবী সংঘের আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী এবং সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব আফজালুল বাসার। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এবং মূল বক্তব্য দেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।

সভায় অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বর্তমান সরকার অন্তর্বর্তীকালীন এবং এর মূল দায়িত্ব হল নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা নির্বাচিত প্রতিনিধির হাতে হস্তান্তর করা। এই সময়ে বামপন্থি জোট গঠনের সম্ভাবনাও আলোচনা হতে পারে। নির্বাচনের পাশাপাশি, এই পরিষদের অন্যতম দায়িত্ব হবে সংবিধান সংশোধন করা। কেননা, বর্তমান সংবিধান গণতান্ত্রিক মূলনীতি থেকে বিচ্যুত।

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম তার বক্তৃতায় বলেন, সংবিধান সংশোধন করতে একটি কমিশন গঠন করা জরুরি। বর্তমান সরকারের অধীনে এই কাজ শুরু করতে হবে এবং জনগণকে সচেতন করতে হবে। ফ্যাসিবাদী আন্দোলনের পরিমাণ কমিয়ে একটি শোষণমুক্ত সংগ্রাম চালানোর প্রয়োজন রয়েছে।

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ উল্লেখ করেন, অতীতের ছাত্র আন্দোলন থেকে বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন পর্যালোচনা করতে গিয়ে দেখছেন, সংবিধানের ক্রমাগত সংশোধনের ফলে এটি এখন অধিকতর স্বৈরতান্ত্রিক হয়ে উঠেছে। মুক্তিযুদ্ধের মূল আকাঙ্ক্ষাগুলি সংবিধানে থাকলেও অনেক আইন এই আকাঙ্ক্ষাকে অগ্রাহ্য করে। তাই, নতুন সরকারের অধীনে এই সংবিধানের পুনর্মূল্যায়ন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

সাইফুল হক বলেন, তরুণদের লড়াইয়ের মাধ্যমে রাষ্ট্রের অচলতা প্রমাণিত হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচিত মানুষের সঙ্গে আলোচনা করে একটি জাতীয় ঐক্যমত্য গঠন করা। অনির্দিষ্টকাল সরকারের ক্ষমতায় থাকার সুযোগ নেই, তাই কোন সংস্কার কীভাবে হবে তা স্পষ্ট করা প্রয়োজন।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বর্তমান সরকারের গঠনের পর এখনও কোনো পলিসি নির্ধারণ করা হয়নি। নতুন বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রাম শুরু হয়েছে এবং এর মধ্যে সংবিধানের সেই অংশগুলির সংশোধন অত্যন্ত জরুরি যা একক ব্যক্তিকে ক্ষমতাধর করে তোলে। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ ছাড়া একটি গণতান্ত্রিক সমাজ গঠন সম্ভব নয়।


More News Of This Category
https://slotbet.online/