বগুড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষক সেলিম হোসেনের (৩৫) মৃত্যু সংক্রান্ত ঘটনায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ১০১ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৩৫০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

নিহত সেলিম হোসেনের বাবা সেকেন্দার আলী শুক্রবার বগুড়া সদর থানায় এই মামলা করেন। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে যে, শেখ হাসিনা এবং ওবায়দুল কাদেরকে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

বগুড়া সদর থানার ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সেলিম হোসেন বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার পীরব ইউনিয়নের পালিকান্দা গ্রামে বাস করতেন।

মামলায় আসামিদের মধ্যে আওয়ামী লীগের দুই সাবেক সংসদ সদস্য, পাঁচজন উপজেলা চেয়ারম্যান, দুইজন মেয়র, বগুড়া পৌরসভার আটজন কাউন্সিলর, দশজন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ২৫ জন জনপ্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।

প্রধান আসামিদের মধ্যে রয়েছেন বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বগুড়া-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মজিবর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বগুড়া-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি টি জামান নিকেতা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম, সাগর কুমার রায়, এ কে এম আসাদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদৎ আলম, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফি নেওয়াজ খান, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হাসান, বগুড়া জেলা যুবলীগের সভাপতি শুভাশীষ পোদ্দার, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সাজেদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার রহমান, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব সাহা, সাধারণ সম্পাদক আল মাহিদুল ইসলাম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক দুই সভাপতি আল রাজি জুয়েল ও নাঈমুর রাজ্জাক, সাবেক দুই সাধারণ সম্পাদক মাশরাফি হিরো ও অসীম কুমার রায়, শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মান্নান আকন্দ, বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মাসুদুর রহমান, চেম্বারের সহসভাপতি ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাফুজুল ইসলাম এবং সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু সুফিয়ান।

এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ৪ আগস্ট বেলা তিনটার দিকে বগুড়া শহরের সাতমাথায় আইএফআইসি ব্যাংকের সামনে আওয়ামী লীগের সাবেক দুই সংসদ সদস্যসহ সাত নেতার নেতৃত্বে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালানো হয়। হামলায় ককটেল ও পেট্রোলবোমা ব্যবহার করা হয় এবং সেলিম হোসেনকে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। হামলাকারীরা রামদা ও হকিস্টিক দিয়ে তাঁকে আঘাত করে এবং পরে অস্ত্র দিয়ে তাকে হত্যা নিশ্চিত করেন।