আজকের শহুরে জীবনযাত্রায় আমাদের খাদ্যাভ্যাস এবং দৈনন্দিন অভ্যাসগুলো হরমোনের ভারসাম্যকে প্রভাবিত করতে পারে। এমন কিছু সাধারণ অভ্যাস রয়েছে যা শরীরের হরমোনের সুষম ভারসাম্য হারাতে সহায়তা করে। এখানে এমন ছয়টি অভ্যাস নিয়ে আলোচনা করা হলো যা আপনার হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে:
শরীরের কর্টিসল হরমোন, যা স্ট্রেস হরমোন হিসেবে পরিচিত, সাধারণত সকালে সবচেয়ে বেশি নিঃসৃত হয়। প্রোটিনসমৃদ্ধ সকালের নাশতা কর্টিসলের নিঃসরণ কমাতে সহায়তা করে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য ও মেটাবলিজমে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। উদাহরণস্বরূপ, একটি সেদ্ধ ডিমে প্রায় ৬ গ্রাম প্রোটিন থাকে, তাই সকালে দুটি সেদ্ধ ডিম খাওয়ার মাধ্যমে আপনার প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করা যেতে পারে।
প্রাতঃকাল এক কাপ চা বা কফি পান করাও কর্টিসলের মাত্রা বাড়াতে সহায়তা করে। সকালের সময় এই পানীয়গুলো কর্টিসলের নিঃসরণ বাড়াতে পারে, যা শরীরের স্ট্রেস লেভেলকে প্রভাবিত করে।
জাঙ্ক ফুড, প্রসেসড ফুড এবং অতিরিক্ত চিনি বা মিষ্টিজাত খাবার গ্রহণ করলে ইনসুলিনের মাত্রা বেড়ে যায়। উচ্চ ইনসুলিন স্তর চুল পড়া, ত্বকের সমস্যা এবং ব্রণের সৃষ্টি করতে পারে।
মেলাটোনিন হরমোন ঘুমের চক্র বজায় রাখতে সহায়তা করে। দিনে মেলাটোনিন নিঃসরণ কম হয়, তাই সকালে ভোরের আলো দেখার পর ঘুমালে এটি শরীরের হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। মেলাটোনিন অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং কর্টিসল কমায়। রাতের ঘুমের অভাব মেলাটোনিন ও থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্যকে প্রভাবিত করতে পারে।
সেরোটোনিন হরমোন আমাদের মেজাজ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে এবং শরীরের মেটাবলিজম সিস্টেম সচল রাখে। সূর্যের আলো বা প্রকৃতির সংস্পর্শে আসলে সেরোটোনিনের নিঃসরণ বৃদ্ধি পায়। প্রকৃতির সংস্পর্শে না যাওয়া বা যথেষ্ট সূর্যালোক না পাওয়া সেরোটোনিনের স্তর কমাতে পারে।
হাসির অভাবও হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। হাসলেই এন্ডোরফিন হরমোন নিঃসৃত হয় যা শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়, হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এবং মেটাবলিজম উন্নত করে। গান শোনা, সিনেমা দেখা, ব্যায়াম করা এবং হাঁটাও এন্ডোরফিনের নিঃসরণ বাড়াতে সহায়তা করে।
এই অভ্যাসগুলো সচেতনভাবে পরিবর্তন করলে আপনার হরমোনের ভারসাম্য উন্নত হতে পারে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভালো থাকতে পারে।