• বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ০৫:৩৪ পূর্বাহ্ন

চট্টগ্রাম আদালতের কার্যক্রম বন্ধ, নিহত আইনজীবীর প্রথম জানাজা সম্পন্ন

Reporter Name / ৩৮ Time View
Update : বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪

চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষে নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলামের হত্যার প্রতিবাদে আইনজীবীরা কর্মবিরতি পালন করছেন। বুধবার সকাল থেকে চট্টগ্রামের ৭৪টি আদালতের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। আইনজীবীরা আদালত প্রাঙ্গণে জড়ো হয়ে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ করছেন।

বিকেল ১০টার দিকে আদালত প্রাঙ্গণে নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলামের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। নিহত আইনজীবীর লাশ নিয়ে আসলে সেখানে উপস্থিত আইনজীবীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাঁরা দ্রুত হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেন। জানাজায় অংশ নেন চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতারা, যেমন- অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল আহমেদ, নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, এবং অন্যান্য স্থানীয় নেতারা।

এ সময় চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আশরাফ হোসেন চৌধুরী, ও পিপি মফিজুল হক ভূঁইয়া বলেন, যদি হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার না করা হয়, তবে আরও কঠোর কর্মসূচি নেওয়া হবে।

নগর পুলিশের উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) এ এন এম হুমায়ুন কবির জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম আদালতের সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে এবং আজ কোনো মামলার শুনানি হচ্ছে না। দূরদূরান্ত থেকে আসা বাদী ও আসামিরা ফেরত যাচ্ছেন এবং মামলাগুলোর পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হচ্ছে।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম আদালতের মূল ফটকের সামনে সাইফুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সাইফুল ইসলাম একজন সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) ছিলেন। সংঘর্ষে অন্তত ৩৭ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১০ জন পুলিশ সদস্যও রয়েছে।

এ ঘটনার সূত্রপাত ঘটে গতকাল দুপুরে, যখন রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর করা হয় এবং তাকে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। এ সময় চিন্ময়ের অনুসারীরা প্রিজন ভ্যান আটকে দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পুলিশ ও বিজিবি লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সংঘর্ষের পর চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

এদিকে, আজ সকালে চট্টগ্রাম আদালত ভবনে অবস্থিত আইনজীবী ক্লার্ক অ্যাসোসিয়েশনের কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা কার্যালয়ের আসবাবপত্র ভেঙে ফেলেন এবং পরে সেখানে আগুন ধরিয়ে দেন। এ ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র পুড়ে গেছে বলে জানা গেছে।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গত সোমবার রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এরপর তাকে চট্টগ্রামে আনা হয়। ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম শহরের চান্দগাঁও থানা এলাকার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে চিন্ময় কৃষ্ণসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে, ফিরোজ খানকে বিএনপির পক্ষ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজুর রহমান জানিয়েছেন, জামিনের আবেদন করা হলে আদালত তা নামঞ্জুর করেন। পরবর্তীতে আইনজীবীর মাধ্যমে মহানগর দায়রা জজ আদালতে আপিল করা হয়, তবে সেই শুনানি এখনও হয়নি এবং তার পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি।


More News Of This Category
https://slotbet.online/