• বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ০২:৪৬ অপরাহ্ন

ভালো খেলছে ভারত, লাভ হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার

Reporter Name / ৩৬ Time View
Update : সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

শিরোনামটা হয়তো অদ্ভুত মনে হতে পারে, তবে বাস্তব ঘটনা তাই বলে। পার্থে ভারত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এক দারুণ পারফরম্যান্স উপহার দিলেও, এই ভালো খেলা আসলে অস্ট্রেলিয়ার জন্যই লাভজনক হয়ে উঠেছে। ভারত দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৮৭ রান তুলে অস্ট্রেলিয়ার সামনে ৫৩৪ রানের বিশাল লক্ষ্য রেখেছে। অথচ, টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে কখনো কোনো দল চতুর্থ ইনিংসে ৪৩৩ রান তাড়া করতে পারেনি।

তবে মাঠের খেলায় প্যাট কামিন্সদের বিপদ সত্ত্বেও ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া কর্তৃপক্ষের বেশ স্বস্তি থাকার কথা নয়। ভারত ভালো খেললেও আদতে তারা লাভবান হচ্ছে, যা একপ্রকার ‘পেটে খেলে পিঠে সয়’ পরিস্থিতি।

ভারত দ্বিতীয় ইনিংসে ১৩৪.৩ ওভার ব্যাটিং করেছে, প্রায় আট ঘণ্টার বেশি সময় ধরে। এর মধ্যে ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংস একত্রে টিকেছে মাত্র ১০১ ওভার (৪৯.৪ ও ৫১.২ ওভার)। ম্যাচের প্রথম দিনেই ১৭টি উইকেট পড়েছে, যা খুবই অস্বাভাবিক। ভারত এক সেশনে ১৫০ রানেই অলআউট হওয়ার পর অস্ট্রেলিয়া এক সেশনে ৬৭ রান করে হারিয়েছে ৭ উইকেট।

টেস্ট ক্রিকেটে সাধারণত ৪০টি উইকেটের পতন হয়, এবং প্রথম দিনেই অর্ধেক উইকেট পড়ে গেলে খেলা দ্রুত শেষ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সেই সময় ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া উদ্বিগ্ন ছিল যে এই ম্যাচটি দুই বা তিন দিনে শেষ হয়ে যেতে পারে, যা তাদের ব্যবসার জন্য ক্ষতির কারণ হবে।

সিডনি মর্নিং হেরাল্ডে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারত-অস্ট্রেলিয়া টেস্টের সময় যত কম হবে, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার ক্ষতির পরিমাণ ততই বাড়বে। কারণ, চ্যানেল সেভেন পুরো পাঁচ দিনের জন্য বিজ্ঞাপন কিনেছে, যা তারা উচ্চমূল্যে বিক্রি করেছে। স্টেডিয়ামে টিকিট, মেম্বারশিপ এবং হসপিটালিটি প্যাকেজের মাধ্যমে আয় করে থাকে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। এই আয় কেবল তখনই হয় যখন ম্যাচ চলমান থাকে, তবে ম্যাচ দ্রুত শেষ হলে এই আয়ের সমস্ত পথ বন্ধ হয়ে যায়।

একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যদি ম্যাচ দ্রুত শেষ হয়, তবে প্রতিদিন ২০ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার ক্ষতি হয়। প্রথম দিনে যদি ১৭টি উইকেট পড়ে যায়, তাহলে এটা শঙ্কার সৃষ্টি করেছিল যে হয়তো তৃতীয় দিনেই খেলা শেষ হয়ে যাবে। সেই সময় স্টেডিয়ামে ৬০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার গ্যালারিতে তৃতীয় দিনের জন্য ১২ হাজার টিকিট বিক্রি হয়ে গিয়েছিল।

পার্থ স্টেডিয়ামে দর্শকদের জন্য সুবিধা চালু রাখতে গিয়ে যে খরচ হয়, তা উঠানোর জন্য গড়ে প্রতিদিন ৩০ হাজার দর্শক প্রয়োজন। বিগ ব্যাশ লিগ বা এএফএল ম্যাচে এমন দর্শক সংখ্যা সাধারণত থাকে, তবে টেস্টে এটা কখনও কখনও কমে যায়। আর যদি পাঁচ দিনের ম্যাচ তিন দিনে শেষ হয়ে যায়, তবে ক্ষতি অবশ্যম্ভাবী।

ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী নিক হকলিও বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির শুরুর আগে বলেছেন, “আমরা চাই যে ম্যাচটি পঞ্চম দিনের শেষ সেশন পর্যন্ত চলুক। একটি দীর্ঘ, দুর্দান্ত প্রতিযোগিতা যেন হয় যাতে মানুষ পুরো ম্যাচ উপভোগ করতে পারে।”

এ কারণে, পার্থ টেস্টের শুরু সিডনিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের চেয়ে একদিন পরে করা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া শুক্রবার শুরু করার পরিকল্পনা করেছে, যাতে সাপ্তাহিক ছুটির দুই দিন খেলার মধ্যে আনা যায়। এবং ভারতের ব্যাটিং প্রদর্শনী সেই ইচ্ছাই পূর্ণ করেছে, কারণ এখন অস্ট্রেলিয়া পুরো পাঁচ দিনই আশা করতে পারে।


More News Of This Category
https://slotbet.online/