• বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ০৯:২৭ অপরাহ্ন

অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নয়নে ‘অনিশ্চয়তা’ দূর করতে হবে

Reporter Name / ৩৯ Time View
Update : শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বর্তমানে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি, বিশেষত আন্তর্জাতিক ঋণমান মূল্যায়ন সংস্থা মুডিসের সাম্প্রতিক মূল্যায়নের পর থেকে। মুডিস বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি ঋণমান কমিয়ে দিয়েছে এবং অর্থনীতির পূর্বাভাস ‘ঋণাত্মক’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। সংস্থাটি এর পাশাপাশি দেশের বেসরকারি খাতের ছয়টি ব্যাংকের ঋণমানও কমিয়েছে। এর ফলে দেশের ব্যাংকগুলো এবং আর্থিক খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিশেষত, এটি বিদেশি লেনদেনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর জন্য নতুন সমস্যা তৈরি করতে পারে, যার প্রভাব বিদেশি ঋণ গ্রহণ এবং বিদেশি বিনিয়োগে পড়বে।

মুডিস বিশ্বের প্রধান ঋণমান মূল্যায়ন প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে একটি, এবং এর মূল্যায়নকে আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। তবে অর্থনীতিবিদদের মতে, এই মূল্যায়ন ততটা অপ্রত্যাশিত ছিল না। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থার পাশাপাশি বিভিন্ন আন্দোলন, নির্বাচনী অনিশ্চয়তা এবং সরকারের সংস্কার কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে এমন মূল্যায়ন করা হয়েছে। বিশেষত রাজনৈতিক পরিস্থিতির স্থিতিশীলতা এবং নির্বাচন-পরবর্তী পরিস্থিতির ওপর অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা নির্ভর করছে। এই অনিশ্চয়তা দূর করতে হলে সবার আগে রাজনৈতিক এবং নির্বাচনী পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে হবে, যা দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে স্থিতিশীল করতে সহায়তা করবে।

বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, ‘মুডিসের মূল্যায়ন বাংলাদেশের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে হয়েছে। দেশের পরিস্থিতি সবার জানা, তাই এটি খুব বেশি অপ্রত্যাশিত ছিল না।’ তিনি আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা দূর না হলে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা কাটানো কঠিন হবে।’

বাংলাদেশ ব্যাংক, তবে, মুডিসের এই মূল্যায়ন নিয়ে দ্বিমত প্রকাশ করেছে। তারা মনে করে, ২০১৩ সালের গণ–অভ্যুত্থানের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে যে অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে, তা যথাযথভাবে মুডিসের মূল্যায়নে প্রতিফলিত হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংক দাবি করেছে, মুডিস শিগগিরই বাংলাদেশ সফরের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি আরও বিস্তারিতভাবে মূল্যায়ন করবে, এবং সরকারের নেয়া নীতি ও পদক্ষেপগুলো সঠিকভাবে মূল্যায়িত হবে।

আর্থিক খাতের বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ঋণমান কমানোর প্রভাব বাংলাদেশে বাণিজ্যিক ঋণের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে দেখা যেতে পারে। এর ফলে আন্তর্জাতিক ঋণ নেওয়া আরও ব্যয়বহুল হতে পারে, সুদের হার বেড়ে যেতে পারে এবং বিদেশি বিনিয়োগের প্রবাহও বাধাগ্রস্ত হতে পারে। ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন বলেছেন, মুডিসের মূল্যায়ন বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর জন্য আন্তর্জাতিক লেনদেনে নতুন সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষ করে ঋণপত্রের বিপরীতে বিদেশি ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে নিশ্চয়তা সুবিধা পেতে আরও কঠিন হবে।

দেশের ঋণমান পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় ব্যাংকগুলোকেও এর দায়ভার নিতে হচ্ছে, এবং পরিস্থিতির উন্নতি না হলে সামগ্রিক অর্থনীতি ও আর্থিক খাতের সংকট বাড়তে পারে।

[step_timer next_link=”https://primevision24.com/2982-ebkzys/” button_text=”Next”]


More News Of This Category
https://slotbet.online/