ঢাকা শহরের জুরাইন রেলক্রসিংয়ে গতকাল (শুক্রবার) বিকেলে ট্রেন চলাচল পুনরায় শুরু হয়েছে, যখন রিকশাচালকেরা অবরোধ তুলে নেন। দুপুর ১১টার দিকে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলের অনুমতি দেওয়ার দাবিতে প্রায় দুই শতাধিক রিকশাচালক রেললাইন অবরোধ করেন। এর ফলে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ও পদ্মাসেতু হয়ে রাজশাহী ও খুলনাগামী ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
তবে বিকেল ৩টার দিকে রিকশাচালকেরা সড়ক থেকে সরে গেলে ট্রেন চলাচল আবার শুরু হয়। ঢাকা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার মো. আনোয়ার হোসেন জানান, ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়ে গেছে।
অবরোধের সময়ে সড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয় এবং পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রিকশাচালকদের অনুরোধ করে সরে যেতে। কিন্তু তারা বিক্ষোভ চালিয়ে যান। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে রিকশাচালকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয় এবং পুলিশ রিকশাচালকদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে এবং লাঠিপেটা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর ট্রেন চলাচল পুনরায় শুরু হয়।
এছাড়া গতকালও রাজধানীর অন্যান্য জায়গায় সড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটে। মহাখালীতে রিকশাচালকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষ হয় এবং কিছু গাড়ি ও ভবন ভাঙচুরের শিকার হয়। এমন পরিস্থিতির মধ্যে প্রায় ছয় ঘণ্টা ধরে সারা দেশের ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার হাইকোর্ট ঢাকার সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশার চলাচল বন্ধ করার নির্দেশনা দেয়। এই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে রিকশাচালকদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়, বিশেষ করে গত সপ্তাহে এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভের পর। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে ব্যাটারিচালিত রিকশার চলাচল বন্ধ করা সম্ভব হয়নি, তবে সরকার অবৈধ যানবাহনগুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে।
ঢাকা শহরে বর্তমানে প্রায় ১০ লাখ ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল করছে, এবং সারাদেশে এই সংখ্যা প্রায় ৬০ লাখের কাছাকাছি পৌঁছেছে। এসব যানবাহনের কাঠামোগত ত্রুটি রয়েছে, যা সড়কে দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এগুলোর পূর্ণ বন্ধের চেয়ে কারিগরি উন্নয়নের মাধ্যমে নিয়মিত ব্যবহার নির্ধারণ করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হতে পারে।