খেলাপি ঋণ আদায়ে অর্থঋণ আদালতকে আরও সক্রিয় করতে সরকার একটি নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যাচ্ছে। বিশেষত, হাইকোর্টে চলমান খেলাপি ঋণ সংক্রান্ত রিট মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তি নিশ্চিত করতে দুইটি বিশেষ বেঞ্চ গঠন করা হবে। সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে বিচারিক ক্ষমতা দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, খেলাপি ঋণ সংক্রান্ত মামলাগুলো নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্টের দুটি বেঞ্চ আগামী তিন মাস শুধু এসব মামলা নিয়ে কাজ করবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা, যা ব্যাংক খাতের মোট ঋণের ১৬.৯৩ শতাংশ। একই সময়ে, দেশের ৬০টি ব্যাংকের বিরুদ্ধে অর্থঋণ আদালতে মোট ২ লাখ ৭ হাজার ৫৯৩টি ঋণ সংক্রান্ত মামলা চলমান ছিল, যার বিপরীতে প্রায় ২ লাখ ৩৬ হাজার ৪৮৯ কোটি টাকা আটকে রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অর্থ উপদেষ্টা আরও জানান, যারা সঠিকভাবে ঋণ পরিশোধ করেন এবং নিয়মিত কর পরিশোধ করেন, তাদের জন্য কোনো সমস্যা নেই। সমস্যা শুধু সেইসব ব্যবসায়ীদের, যারা অতীতে ঋণ পরিশোধে অনীহা দেখিয়েছেন বা অবৈধ সুবিধা গ্রহণ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, সরকারের অর্থনৈতিক পরিকল্পনায় বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা হচ্ছে, বিশেষত সেসব প্রকল্পের অগ্রগতি, যেগুলোর কোনো বাস্তব অগ্রগতি হয়নি বা যেগুলো খুব ধীরে চলছে। সরকারের উদ্দেশ্য হল, অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প বাতিল করা এবং প্রয়োজনীয় প্রকল্পগুলোর দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা।
বাংলাদেশ ব্যাংক সম্পর্কে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, অতীতে ব্যাংক খাতের সুশাসন দুর্বল ছিল। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে এবং ব্যাংক খাতের সমস্যা সমাধানের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ইসলামী ব্যাংক পুনরায় কার্যক্রম শুরু করেছে, তবে কিছু ব্যাংক এখনও সমস্যায় পড়ছে। তিনি আশ্বস্ত করেছেন, কোন ব্যাংকই বন্ধ হবে না এবং গ্রাহকদের আমানত নিরাপদ থাকবে।
এছাড়া, অর্থ উপদেষ্টা আরও উল্লেখ করেন, দুর্বল ব্যাংকগুলোর জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে যাতে তারা তাদের আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে পারে।
বাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে বিভিন্ন পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি যেমন পেঁয়াজ, আলু এবং সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে, যদিও এর পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য পণ্য আমদানিতে শুল্কহার কমানো হয়েছে, কিন্তু মূল্যস্ফীতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা এখনো সম্ভব হয়নি।
তিনি শেষ পর্যন্ত মানুষের দুঃখ-দুর্দশার প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে বলেন, তিনি নিজেও জানেন বাজারে এক হাজার টাকা দিয়ে কতটুকু কেনাকাটা করা সম্ভব, কারণ তিনি নিজে বাজারে গিয়ে এই অভিজ্ঞতা পেয়েছেন।
https://slotbet.online/