বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এখন একটি কঠিন অবস্থানে রয়েছে, যেখানে তারা আওয়ামী লীগকে নির্বাচন থেকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে দোদুল্যমান অবস্থায় রয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের নেতারা একেবারে স্পষ্টভাবে আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া থেকে দূরে রাখতে চাইছেন, তবে বিএনপি এই উদ্যোগের বিরোধিতা করছে এবং দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে।
বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো চায় যে দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক, কিন্তু ছাত্রনেতারা আওয়ামী লীগকে রাজনীতি এবং নির্বাচনের বাইরে রাখার দাবিতে সোচ্চার। তাদের দাবি, নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক সংস্কার করা হোক এবং আওয়ামী লীগের ভবিষ্যত রাজনৈতিক অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠুক। তাদের মতে, এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করা সরকারের ওপর চাপ তৈরি করেছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস কিছুদিন আগে একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন যে, বিএনপি ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ফেলেছে এবং তারা সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে চায়। কিন্তু ছাত্রনেতারা এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বলছেন যে, গণহত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া উচিত নয়। তারা ‘দ্বিতীয় অভ্যুত্থান’ ঘটানোর হুমকিও দিয়েছেন।
এদিকে, সরকারের মধ্যে চলমান আলোচনা এবং রাজনৈতিক সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা জানিয়েছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর বিচারের বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি, তবে তারা নির্বাচন পূর্বে কিছু প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার সম্পন্ন করতে চান।
বিশ্বস্ত সূত্রের মতে, সরকার এবং ছাত্রনেতাদের চাপের মধ্যে এখনো নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি, তবে ছাত্রনেতারা সংস্কারের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে বিচ্ছিন্ন করার বিষয়ে অটল। এই পরিস্থিতি আগামী দিনে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন সংকট সৃষ্টি করতে পারে।