কুমিল্লার ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি একটি মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে অবস্থান করে, যেখানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত ১৩টি দেশের ৭৩৭ জন সৈনিক শায়িত আছেন। এই ঐতিহাসিক স্থানটি কুমিল্লা সেনানিবাস সংলগ্ন হওয়ায়, এখানে যুদ্ধ না হওয়ার পরও যুদ্ধাহত সৈনিকদের সমাহিত করার জন্য একটি সমাধিস্থল তৈরি করা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশরা কুমিল্লায় একটি বড় হাসপাতাল স্থাপন করে, যেখানে বার্মায় যুদ্ধে আহত সৈনিকদের চিকিৎসা দেওয়া হত, আর যারা সেখানে মারা গিয়েছিলেন, তাদের মরদেহ এখানে সমাহিত করা হয়।
ময়নামতি যুদ্ধসমাধি নির্মাণে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন কুমিল্লার সেনানিবাসের কর্মকর্তারা, যার মধ্যে ছিলেন কাজী আবদুল মুত্তালিব, যিনি ব্রিটিশ কমান্ডারের ডিফেন্স ইন্টারপ্রেটার হিসেবে কাজ করতেন। সমাধিস্থলটি গঠন করার সময়, স্থানটির সৌন্দর্য, নিরাপত্তা এবং প্রাকৃতিক অবস্থার কারণে এই জায়গাটি নির্বাচিত হয়েছিল। পরবর্তীতে, বিভিন্ন দেশের সৈনিকদের মরদেহ স্থানান্তরিত হয়ে এখানে সমাহিত হয়, যার মধ্যে অন্যতম ছিল ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ভারতের সৈনিকরা।
বর্তমানে, ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি শুধুমাত্র ইতিহাসের একটি অংশ নয়, এটি পৃথিবীজুড়ে পর্যটকদের জন্য একটি গুরুত্ব পূর্ণ স্মৃতিস্তম্ভ। ১৯৬২ সালে জাপানিদের দেহাবশেষ তাদের নিজ দেশে পাঠানোর কার্যক্রম শুরু হলেও, ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি এখনো সবার জন্য উন্মুক্ত এবং প্রতিদিন অনেক দর্শনার্থী এখানে আসেন ইতিহাসের স্মৃতি রোমন্থন করতে।