রাজধানীর কাকরাইলে অনুষ্ঠিত একটি কর্মশালায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তারেক রহমান বলেন, "গণতান্ত্রিক সমাজে জনগণ তাদের ভোটের মাধ্যমে সরকারের প্রতি জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা করতে পারে। কিন্তু এদেশে একাধিক রাজনৈতিক নেতা-কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন এই ভোটের অধিকার রক্ষা করতে গিয়ে। জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য আমাদের অবশ্যই একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে।"
এছাড়া তিনি মন্তব্য করেন, "একটি দেশের রাজনীতি যদি দুর্বল বা রুগ্ণ হয়ে পড়ে, তাহলে সেই দেশের অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিচার ব্যবস্থা ও প্রশাসনও তাতে আক্রান্ত হবে। দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন তখন অব্যাহত রাখা সম্ভব নয়। তাই বিএনপির মূল লক্ষ্য হল, দেশের মানুষের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং সুষ্ঠু জবাবদিহি নিশ্চিত করা।"
তারেক রহমান দেশের পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে একটি পরিবারকেও উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, "যেভাবে পরিবারে সন্তানের কোনও ভুলের জন্য বাবা-মায়ের কাছে জবাবদিহি থাকতে হয়, ঠিক তেমনি একটি দেশের সরকারেরও জনগণের কাছে জবাবদিহি থাকা উচিত। গত ১৫ বছর ধরে দেশে জবাবদিহি ছিল না, যার ফলে ভোটাধিকার হরণ, গুম-খুন, দুর্নীতি এবং অর্থপাচারের মতো ঘটনা ঘটেছে।"
তিনি আরও বলেন, "এই সব সমস্যা দূর করতে হলে, প্রথমেই জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর সেটি সম্ভব, শুধু জনগণের ভোটের মাধ্যমে।"
এদিন তারেক রহমান বিএনপির দলীয় কাঠামোর সংস্কার এবং দেশের উন্নতির জন্য দাখিল করা ৩১ দফা প্রস্তাবনার গুরুত্বও উল্লেখ করেন। তিনি জানান, "যখন অন্য কেউ এসব সংস্কারের বিষয়ে ভাবনাও ভাবেনি, তখন বিএনপি ২৭ দফা সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছে, যা এখন ৩১ দফায় পরিণত হয়েছে। এই প্রস্তাবনা বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং জনগণের কল্যাণের জন্য আমাদের চিন্তা ও উদ্যোগের প্রধান স্বাক্ষর।"
আগামীতে বিএনপির শাসন প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা সম্পর্কে তারেক রহমান বলেন, "যদি আমরা দলীয় ঐক্য বজায় রেখে, জনগণের চাহিদার প্রতি সঠিকভাবে সাড়া দিতে পারি, তাহলে কোনো সন্দেহ নেই যে বিএনপি আগামী দিনে ক্ষমতায় আসবে।" তিনি নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান, এই ৩১ দফা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে এবং বিএনপির লক্ষ্য বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে।
তারেক রহমানের এই বক্তব্যটি বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ব্যাপক গুরুত্ব লাভ করেছে। তার মতে, বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করলে দেশের উন্নয়নের রাস্তা সুগম হবে এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে।