দক্ষিণ শ্রীপুর গ্রামের কৃষক নুরুন্নবী সরকার (৬০) বলেন, গত এক মাসে প্রায় ৮ বিঘা জমি নদী গর্ভে চলে গেছে। তাঁর মধ্যে ৫ বিঘা জমি ছিল আমন ফসলের, যার আধা পাকা ধান তিনি কেটে নিয়েছেন ভাঙনের আশঙ্কায়। এদিকে, শফিউল মুন্সি (৫০) নামের আরেক কৃষক জানান, গত এক মাসে তার ৪ বিঘা আমন জমি নদীতে চলে গেছে। এই পরিস্থিতিতে, তারা সরকারের কাছে কোনো সাহায্য চাচ্ছেন না, তবে নদীভাঙনের হাত থেকে গ্রামগুলো বাঁচানোর জন্য অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ দাবি করছেন।
পুটিমারি গ্রামের কৃষক আবদুল হামিদ (৫৫) বলছেন, "নদী হামার ঘরে সব কিছু নিয়ে নিচে। এক বিঘে জমি ছিল, তাতে আমন ফসল ছিল। ১৫ দিন আগেই সব চলে গেছে নদীতে। হামরা সরকারের কাছে কিচু চাইনে, নদীভাঙার হাত থেকে হামার ঘর বাঁচাও।" একইভাবে, আবদুল জোব্বার (৫২) নামের আরেক কৃষক জানান, ১০ দিনের মধ্যে তার দুই বিঘা জমির ভুট্টা নদীতে চলে গেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, শ্রীপুর গ্রামে প্রতিদিন গড়ে ৪ থেকে ৫ ফুট জমি নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম জানান, যদি এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকে, তবে গোটা গ্রামটিই অল্পদিনের মধ্যে বিলীন হয়ে যাবে। তিনি আরো দাবি করেছেন, বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডে (পাউবো) জানানো সত্ত্বেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাইবান্ধা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক জানিয়েছেন, শ্রীপুর এলাকায় তিস্তার ভাঙন রোধে কোনো তৎকালীন কার্যক্রম নেই। তবে, ডান এবং বাঁ তীরে প্রায় ৩১ কিলোমিটার নদীর তীর সংরক্ষণের পরিকল্পনা রয়েছে, যার জন্য সমীক্ষা কার্যক্রম শেষ হয়েছে এবং প্রকল্প প্রণয়নের কাজ চলছে।
এভাবে যদি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হয়, তবে নদীভাঙনে এসব গ্রামের বাসিন্দাদের কৃষি জমি এবং বসতবাড়ি উভয়ই হারানোর আশঙ্কা প্রবল হয়ে উঠবে।