ফখরুল বলেন, “আমি আশাহত, কারণ আমি আশা করেছিলাম যে, প্রধান উপদেষ্টা তাঁর প্রজ্ঞা দিয়ে সমস্যাগুলোর সমাধান চিহ্নিত করে নির্বাচনের রূপরেখা দেবেন। তবে তা হয়নি।” তিনি আরও বলেন, “নির্বাচন দিলে আমাদের অর্ধেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে, বিএনপি ক্ষমতায় যাবে না যাবে—তাতে আমার কিছু যায় আসে না।” তাঁর মতে, যদি নির্বাচন বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট রূপরেখা দেওয়া হয়, তবে দেশের যেসব শক্তি স্থিতিশীলতা নষ্ট করার চেষ্টা করছে, তারা আপনা-আপনি পিছিয়ে পড়বে। কারণ, জনগণের সমর্থন ছাড়া কোনো সরকারই টিকে থাকতে পারে না।
ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে সরকারকে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে, এবং নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হলে দেশে রাজনৈতিক সংকট অনেকটা লাঘব হবে। তিনি বলেন, “আজ যারা বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চাইছে, তারা যদি দেখতে পায় যে সরকার জনগণের সমর্থনে চলছে, তাহলে তারা বিরোধিতা করতে বাধ্য হবে।”
তিনি প্রশাসনিক সংস্কারের বিষয়ে বলেন, “আমরা সংস্কারের বিরোধিতা করছি না, বরং একে বাস্তবায়নের জন্য যথাসাধ্য সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। তবে, যারা প্রশাসনে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।” মির্জা ফখরুল আরও বলেন, “বিশেষ করে সচিবালয়ে যেসব কর্মকর্তা স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে কাজ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।”
বিএনপির মহাসচিব দেশের বাজার পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “বর্তমান বাজারে দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি মানুষের জন্য কষ্টকর হয়ে উঠেছে, তবে তারা এটা সহ্য করছে শুধু একটিমাত্র আশায়—একটি সুষ্ঠু নির্বাচন। সরকার যদি বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতে সক্ষম না হয়, তবে অন্তত জনগণের কাছে তাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে।”
অন্যদিকে, মির্জা ফখরুল সরকারকে আশ্বস্ত করে বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, এই সরকার এবং দেশের জনগণ, বিশেষ করে তরুণরা, মিলিতভাবে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে সক্ষম হবে।”
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির নেতৃবৃন্দ, নিতাই রায় চৌধুরী, খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, হেলেন জেরিন খান, আসাদুল করিম, নাজমুল হকসহ দলের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নেতারা।