• বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ০৪:৪৫ পূর্বাহ্ন

বিসমিল্লাহ এর ফজিলত ও গুরুত্ব

Reporter Name / ৩৪ Time View
Update : রবিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২৪

‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ ইসলামের এক গুরুত্বপূর্ণ বাক্যবন্ধ যা প্রতিদিনের জীবনে অসংখ্যবার ব্যবহার করা হয়। পবিত্র কোরআনের বেশিরভাগ সুরার শুরুতে এটি ব্যবহৃত হয়েছে, যা এর গুরুত্বকে প্রমাণ করে। যদিও সুরা তাওবা এর ব্যতিক্রম, অধিকাংশ ইসলামি পণ্ডিত একে কোরআনের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন।

ভালো কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা

ইসলামে প্রত্যেক ভালো কাজ শুরু করার আগে ‘বিসমিল্লাহ’ বলা সুন্নত। এটি আল্লাহর সাহায্য ও বরকত লাভের জন্য একটি পদ্ধতি। কোনো কোনো ইসলামি পণ্ডিত এটিকে মুস্তাহাব বা প্রশংসনীয় আমল হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেছেন,

“যেসব প্রাণীর ওপর আল্লাহর নাম নেওয়া হয়নি, তোমরা সেগুলো ভক্ষণ করো না। কারণ তা গুনাহ।” (সুরা আনআম, আয়াত: ১২১)।

বিসমিল্লাহ ছাড়া জবাই করা প্রাণী খাওয়া নিষিদ্ধ

জুল-হুলাইফার একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে রাফি ইবনে খাদিজ (রা.) বর্ণনা করেছেন,

“যা রক্ত প্রবাহিত করে এবং জবাই করার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা হয়েছে; তা আহার করো।” (বুখারি, হাদিস: ৩,০৭৫)।

এ থেকে বোঝা যায়, ‘বিসমিল্লাহ’ ছাড়া কোনো প্রাণী জবাই করা হলে তা খাওয়া হালাল নয়।

বিসমিল্লাহ ভুলে গেলে করণীয়

হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেছেন যে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,

“যখন তোমাদের কেউ খাওয়া শুরু করে, তখন সে যেন বিসমিল্লাহ বলে। আর যদি সে (খাওয়ার শুরুতে) বিসমিল্লাহ বলতে ভুলে যায় তবে সে যেন বলে, বিসমিল্লাহি আওয়ালাহু ওয়া আখিরাহু।” (আবু দাউদ, হাদিস: ৩,৭৬৭)।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিমের অর্থ ও ব্যাখ্যা

‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ একটি আরবি বাক্য, যার অর্থ হলো, “পরম করুণাময়, অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে (শুরু করছি)।” এই বাক্যে ‘শুরু করা’ ক্রিয়াটি ঊহ্য থাকে এবং এর উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর নামে যেকোনো কাজ বা আমল শুরু করা।

কোরআন ও হাদিসে বিসমিল্লাহর ব্যবহার

  • নুহ (আ.)-এর জাহাজে আরোহণের আদেশ: আল্লাহ বলেছেন, “তোমরা এতে আরোহণ করো আল্লাহর নামে। এর চলা ও থামার নিয়ন্ত্রক একমাত্র আল্লাহ।” (সুরা হুদ, আয়াত: ৪১)।
  • সুলাইমান (আ.)-এর চিঠিতে: আল্লাহ বলেছেন, “নিশ্চয় এটা (চিঠি) সুলাইমানের পক্ষ থেকে। আর এটা পরম করুণাময়, অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে।” (সুরা নামল, আয়াত: ৩০)।

চিঠিপত্রে বিসমিল্লাহর ব্যবহার

ইমাম কুরতুবী (রহ.) লিখেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আমলে চিঠি ও বার্তার শুরুতে বিসমিল্লাহ ব্যবহার করা হতো। চিঠিতে প্রথমে প্রেরকের নাম এবং পরে বিসমিল্লাহ লেখার বিষয়টি বৈধ হলেও, চিঠির শুরুতেই বিসমিল্লাহ লেখা উত্তম। হুদাইবিয়ার সন্ধিপত্রেও পুরো বিসমিল্লাহ লেখার আদেশ দিয়েছিলেন রাসুলুল্লাহ (সা.), যদিও কাফেরদের আপত্তির কারণে ‘বিসমিকাল্লাহুম্মা’ লেখা হয়েছিল।

বিসমিল্লাহ বলা না হলে বরকতের অভাব

আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন যে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,

“প্রত্যেক কথা বা কাজ যা আল্লাহর নাম ছাড়া শুরু করা হয়, তা লেজবিহীন বা অসম্পূর্ণ (বরকতশূন্য)।” (মুসনাদে আহমাদ, ১৪/৩২৯)।

এ থেকে বোঝা যায়, আল্লাহর নামে কাজ শুরু না করলে তাতে বরকত কমে যায়।

‘বিসমিল্লাহ’ এর ব্যবহার শুধু বরকত ও সাফল্য অর্জনের জন্যই নয়, বরং আল্লাহর প্রতি বিনম্রতা ও তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনারও একটি পদ্ধতি।


More News Of This Category
https://slotbet.online/