কুমিল্লায় গত বুধবার রাতে মো. এমরান হোসেন নামের এক সমন্বয়ক হামলার অভিযোগে মামলা করেছেন। মামলায় সাবেক দুই উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাসহ ৯৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, সঙ্গে অজ্ঞাত ১৫০ থেকে ২০০ জনকেও আসামি করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, নাম উল্লেখ করা তিনজন আওয়ামী লীগ নেতার মধ্যে তিনজনই মৃত।

মামলায় ২৭ নম্বর আসামি হিসেবে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কৃষিবিষয়ক সম্পাদক মো. কামাল উদ্দিন মজুমদার, ৩৩ নম্বর আসামি হিসেবে আবদুল মমিন এবং ৫৫ নম্বর আসামি হিসেবে ওয়াহিদুর রহমানের নাম রয়েছে। নিহত তিন নেতার পরিবারের সদস্যরা এর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

বাদী মো. এমরান হোসেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র এবং তিনি শাহামাদার গ্রামের বাসিন্দা। মামলায় বলা হয়েছে, গত ৪ আগস্ট আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালানো হয়।

মৃত নেতাদের পরিবারের সদস্যরা বলেছেন, অভিযুক্ত হওয়া এই নেতারা তাদের জীবদ্দশায় কোনো অপরাধ করেননি। কামাল উদ্দিন মজুমদার ২০২৩ সালের ১১ জুলাই, আবদুল মমিন ২৪ জুন এবং ওয়াহিদুর রহমান গত বছরের সেপ্টেম্বরে মারা যান। আবদুল মমিনের ছেলে আবু সাঈদ বলেন, “বাবা তো কবর থেকে হামলা করেছেন, শুনে অবাক হচ্ছি। তিনি কী করে ৪ আগস্টের ঘটনায় আসামি হন?”

এদিকে মামলার বাদী মো. এমরান হোসেন জানিয়েছেন, যদি মৃতদের নাম ভুলে উল্লেখ হয়ে থাকে, তাহলে পুলিশ তদন্তে সেটি ঠিক করবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু রায়হান জানান, এমরান মামলার জন্য আসামি নির্বাচনে কোনো সমন্বয় করেননি, যা দুঃখজনক। কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. বিল্লাল হোসেন অভিযোগ করেছেন, শুধু এই তিন নেতা নন, কানাডা ও যুক্তরাজ্যে থাকা কয়েকজনকেও মামলায় আসামি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেছেন, মামলার তদন্ত চলছে এবং মৃত ব্যক্তির নাম বাদ দেওয়া হবে। মামলার প্রধান আসামি সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের ছোট ভাই গোলাম সারওয়ার এবং ৪ নম্বর আসামি আবদুল হাই বাবলু, যিনি কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।

মামলার এই জটিলতার কারণে স্থানীয় রাজনীতিতে উত্তেজনা বেড়েছে, এবং সঠিক তদন্তের দাবি জোরালো হচ্ছে।