মাহফুজ আলম, যিনি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান-পরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ছিলেন, তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় পর্বে তিনি দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক এবং ধর্মীয় প্রেক্ষাপটে মানুষের নতুন রাজনৈতিক পরিসরের খোঁজ নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি অভ্যুত্থান-পরবর্তী লিয়াজোঁ কমিটির সমন্বয়ক হিসেবেও কাজ করেছেন, যেখানে ছাত্র ও অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে সম্পর্ক রক্ষার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সংকটের প্রেক্ষাপটে মানুষের প্রতিক্রিয়া

ইসলামপন্থী বিভিন্ন দলের উত্থান সম্পর্কে মাহফুজ আলম বলেছেন, বাংলাদেশে গত ৫০ বছর ধরে ইসলামপন্থীদের সঙ্গে কোনো সংলাপ হয়নি, যা মানুষকে প্রতিক্রিয়াশীল করে তুলেছে। তিনি উল্লেখ করেন, সমাজের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য রাষ্ট্র কোনো দায়িত্ব পালন না করায় এতিমখানাই তাদের ভরসা হয়ে উঠেছে। এ কারণে ইসলামপন্থী রাজনীতির বিস্তৃত হওয়ার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে।

মাজার ভাঙার পেছনে রাজনৈতিক অভিসন্ধি

মাজার ভাঙার ঘটনাগুলো সম্পর্কে মাহফুজ আলম মনে করেন, এ ধরনের ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক আক্রোশের প্রভাব রয়েছে। তিনি মাজার এবং পীর-আউলিয়াদের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করে বলেন, সুফি সাধকেরা বাংলার ইসলামের প্রচার ও প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।

খেলাফত ও রাষ্ট্রীয় ধর্মনিরপেক্ষতা

বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে খেলাফত প্রতিষ্ঠার প্রসঙ্গে মাহফুজ আলম উল্লেখ করেন, খেলাফতের দাবি নতুন কিছু নয়। এটি হাফেজ্জী হুজুরের সময় থেকেই চলে আসছে। তিনি বলেন, বর্তমান রাষ্ট্রীয় কাঠামোর সঙ্গে শরিয়াহর বাস্তবায়ন সম্ভব নয়, বরং ধর্মীয় নৈতিকতা এবং মানবাধিকারের ধারণাকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

ভবিষ্যতের রাজনৈতিক সম্ভাবনা ও ছাত্র আন্দোলন

মাহফুজ আলম বলেন, ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান একটি নতুন রাজনৈতিক পরিসরের দরজা খুলেছে, যেখানে মানুষ পুরোনো রাজনৈতিক দলগুলোর পরিবর্তনের আশা করছে। তিনি উল্লেখ করেন, তরুণদের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, এবং পুরোনো দলগুলো আদর্শগত পরিবর্তন না করলে মানুষ নতুন রাজনৈতিক শক্তির দিকে ঝুঁকবে।

এই সাক্ষাৎকারে মাহফুজ আলমের কথায় স্পষ্ট বোঝা যায় যে, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তনের জন্য নতুন চিন্তাধারার প্রয়োজন রয়েছে এবং তরুণ প্রজন্ম সেই পরিবর্তনের পথে অগ্রসর হতে চায়।