সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধির দাবি নিয়ে সম্প্রতি আলোচনা চলছে। ১৮৯৫ সালে ব্রিটিশ ভারতে আইসিএস পরীক্ষায় সর্বনিম্ন বয়সসীমা ২১ এবং সর্বোচ্চ বয়সসীমা ২৩ বছর নির্ধারিত ছিল। বর্তমানে বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ বছর, যা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের জন্য ৩২ বছর। এখন অনেকেই এই বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবি জানাচ্ছেন।
সম্প্রতি কয়েক শ তরুণ সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারি বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার বিষয়টি পর্যালোচনার জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে। কমিটির প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী জানিয়েছেন, বয়সসীমা বৃদ্ধির যৌক্তিকতা রয়েছে এবং সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিশ্লেষকেরা অবশ্য এই বয়সসীমা বৃদ্ধির যৌক্তিকতা নিয়ে দ্বিমত পোষণ করছেন। একজন অবসরপ্রাপ্ত সচিবের মতে, স্থায়ীভাবে ৩৫ বছর করা যৌক্তিক নয়, তবে সাময়িকভাবে দুই বছরের ছাড় দেওয়া যেতে পারে। সরকারের বিনিয়োগের বিষয়টি নিয়ে তিনি বলেন, ৩৫ বছর বয়সে চাকরিতে প্রবেশ করলে প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা অর্জন করতে অনেক সময় লেগে যাবে, যা সরকারের পক্ষে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের উপযুক্ত নয়।
বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করেন, বাংলাদেশে সরকারি চাকরির নিয়োগ প্রক্রিয়া এবং অন্যান্য দেশের নিয়োগ প্রক্রিয়ার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। বিশেষ করে সেশনজট, প্রশ্নপত্র ফাঁস, দুর্নীতি ও অনিয়ম—এসব প্রশাসনিক সমস্যা দূর করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবি মানা হলে কী প্রভাব পড়বে, তা নিয়েও বিশ্লেষকরা বিভিন্ন মতামত দিচ্ছেন। যেমন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সালাহউদ্দিন এম আমিনুজ্জামান মনে করেন, বয়সসীমা বাড়ানোর যৌক্তিকতা নেই এবং এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হতে পারে। তিনি পরামর্শ দেন, সরকার তরুণদের চাকরির সুযোগ বৃদ্ধির জন্য খালি পদগুলোর ধাপে ধাপে পূরণের ব্যবস্থা করতে পারে।