ঢাকার অদূরে সাভারের আশুলিয়ায় সম্প্রতি বন্ধ ঘোষণা করা বার্ডস গ্রুপের চারটি কারখানার শ্রমিকেরা বকেয়া বেতনের দাবিতে নবীনগর থেকে চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন। গতকাল থেকে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ আজ দুপুর ১২টার দিকেও চলছিল। ফলে সড়কের উভয় পাশে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে, যার কারণে হাজারো মানুষ চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন।

পুলিশ ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বার্ডস গ্রুপের পক্ষ থেকে গত রোববার শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধের জন্য তিন মাসের সময় চেয়ে নোটিশ দেওয়া হয়। এতে কর্তৃপক্ষ বেতন শোধ করতে তাদের সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে তিন মাস সময় বাড়ানোর কথা জানায়। এই নোটিশের পর শ্রমিকেরা বকেয়া পাওনার দাবিতে বাইপাইলে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। গতকাল বিকল্প সড়কে কিছু গাড়ি চললেও আজ পরিস্থিতি স্বাভাবিক ভেবে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক ব্যবহার করতে এসে অনেকেই বিপাকে পড়েছেন। যানজটের কারণে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের পাশাপাশি ঢাকা-আরিচা মহাসড়কেও যানজট দেখা দিয়েছে।

বার্ডস গ্রুপের একটি কারখানার একজন নারী শ্রমিক বলেন, ‘আমাদের বেতন না দিয়ে কারখানা বন্ধ করল কেন? হঠাৎ করেই বন্ধ করেছে, আমাদের জানায়নি। এখন আমরা আইন অনুযায়ী পাওনা টাকা চাইছি। আমাদের পাওনা দিয়ে দিলেই আমরা রাস্তা অবরোধ করব না। গতকালকের তারিখ ছিল টাকা দেওয়ার, কিন্তু সকাল ৮টায় গিয়ে দেখি বেতন দিচ্ছে না, উল্টো তিন মাস পর বেতন দিবে বলছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না।’

অপর এক শ্রমিক বলেন, ‘কারখানা বন্ধ ঘোষণার পর বাড়িতে চলে গিয়েছিলাম। গতকাল বকেয়া বেতন পরিশোধের কথা ছিল, তাই ফিরে এসেছি। কিন্তু এখন বিপদে পড়েছি। কোথায় থাকব, কী খাব। বেতন যা পাই, তাই দিয়ে কোনোভাবে চলি। সকালে এক পিস শিঙাড়া খেয়েছি শুধু। বেতন দিবে না আগে বললে আসতাম না।’

অবরোধের কারণে মহাসড়কে যানজটের কথা উল্লেখ করে সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আইয়ুব আলী বলেন, ‘কেউ কেউ ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে যানজটে আটকে আছেন। শ্রমিকদের বোঝানোর চেষ্টা চলছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া শিল্প খাতের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, তবে সমাধানে জোরালো চেষ্টা চলছে।’